অনলাইনে নিলাম মুসলিম মহিলাদের, কেন্দ্র ব্লক করল 'Bulli Bai' অ্যাপ
সাইট তৈরিকারী অপরাধীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে শিবসেনা
ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে আজকাল অনেক কিছু পণ্য বিক্রি হয়ে থাকে। কিন্তু বছরের শুরুতেই দেখা গিয়েছিল অনলাইন মাধ্যমে নিলামের জন্য শত শত মুসলিম মহিলার নাম ও ছবি তালিকাভুক্ত করা ছিল। এই অ্যাপের খবর সামনে আসতেই হইচই পড়ে যায় দেশজুড়ে। বিতর্কিত অ্যাপটির নাম 'বুল্লি বাই'। তবে এটি যে প্রথম এমন নয়। এর আগে একই ধরনের একটি অ্যাপ ব্লক করেছিল ভারত সরকার। ওই অ্যাপটির নাম ছিল 'সুল্লি ডিলস'। সম্প্রতি চাপের মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় আইটি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, "এই ঘটনার পিছনে জড়িতদের গিটহাব অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড করা হয়েছে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ অবশ্যই নেওয়া হবে।"
তবে কি এই 'বুল্লি বাই' অ্যাপ? এই অ্যাপ খোলার পরই বুল্লি বাই হিসাবে একাধিক মুসলিম মহিলাদের মুখ দেখা যায়। টুইটারে যে সমস্ত মুসলিম মহিলাদের জোরদার উপস্থিতি রয়েছে, তাঁদের খুঁজে বের করে সেই ছবি এই অ্যাপে ব্যবহার করা হয়। মনে করা হচ্ছে, ডানপন্থী সোশ্যাল মিডিয়া ট্রোলাররা মুসলিম মহিলাদের অবমাননা করতে প্রতিদিন নতুন নতুন মহিলার নাম ও ছবি নিয়ে তাদের ওই 'দিনের চুক্তি' বলে অভিহিত করত। প্রকৃত কোনও নিলাম কখনো না হলেও এই অ্যাপটির একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল মুসলিম মহিলাদের হেয় করা, অপমান করা এবং হেনস্থা করা। ব্যান হয়ে যাওয়া 'সুল্লি ডিলস' অ্যাপেরও কার্যকারিতা ছিল একরকমই। এই দুটি অ্যাপেরই হোস্টিং প্লাটফর্ম ছিল গিটহাব।
সম্প্রতি 'বুল্লি বাই' অ্যাপে নিশানা করা হয়েছিল সাংবাদিক ইসমত আরাকে। তিনি দিল্লি পুলিশে অভিযোগ জানিয়ে একটি চিঠি লেখেন। চিঠিতে তিনি লেখেন, "১ জানুয়ারি বুল্লিবাই. গিটহাব.আইও নামক এক ওয়েবসাইটে আমার বিকৃত একটি ছবি দেখতে পাই। তা দেখে আমি অবাক হয়ে যাই। অশ্লীল সেই ছবিটি অগ্রহণযোগ্য। আমার মত স্বাধীনচেতা মহিলা সাংবাদিকদের হেনস্তা করার উদ্দেশ্যেই এই কাজ করা হয়েছে বলে মনে হয়।" এরপরই সাইবার পুলিশের কাছে ৫০৯ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে হইচই পড়তেই কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ঘোষণা করেন যে ওই অ্যাপ ব্লক করা হয়েছে এবং পুলিশ প্রশাসন পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে শিবসেনা সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী বলেছেন, "ব্লক করার পাশাপাশি এই ধরনের সাইট তৈরিকারী অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরনের প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে নারীদের সাম্প্রদায়িক টার্গেট করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয় এবং ইলেকট্রনিক এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রককে অপরাধীদের খুঁজে বের করতে মুম্বাই পুলিশ সহায়তা করবে।" অন্যদিকে কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর টুইট করে বলেছেন, "অনলাইনে মানুষকে বিক্রি করার বিজ্ঞাপন দেওয়া আইনত অপরাধ।"