২০২২ এর অর্থ বাজেটে কি থাকছে? জানুন ৪০ টি পয়েন্টে

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 01/02/2022   শেষ আপডেট: 01/02/2022 9:43 p.m.
নির্মলা সীতারামন facebook.com/nirmala.sitharaman

নির্মলা সীতারমনের বাজেটের কিছু উল্লেখযোগ্য পয়েন্টস দেখে নিন

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী হিসেবে নির্মলা সীতারামন আজ অর্থাৎ ১ লা ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার চতুর্থ বাজেট পেশ করলেন। সংসদে সকাল ১১ টায় তিনি বাজেট বক্তৃতা দেওয়া শুরু করেন। প্রায় দেড় ঘন্টা ধরে বক্তৃতা দেন তিনি। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এই বাজেট অধিবেশন ছিল একেবারেই কাগজবিহীন। তিনি বাজেট পেশ করার সময় বলেন, "বাজেটে থাকবে আগামী ২৫ বছরের ব্লু প্রিন্ট।" ব্যক্তিগত আয়করের ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন না হলেও ডিজিটাল মুদ্রা নিয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে বাজেটে। এছাড়া প্রযুক্তির বলে বলিয়ান হয়ে আগামী দিনের ভারতকে আরও উন্নত করে তোলার জন্য একাধিক নতুন প্রকল্প নেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতার টপ ৪০ টি পয়েন্ট দেখে নিন এক নজরে:

৪০টি পয়েন্ট, ২০২২ অর্থ বাজেটে

১) আয়কর পরিকাঠামোতে কোনো বদল হবে না। একই থাকছে ব্যক্তিগত কর কাঠামো।

২) চলতি আর্থিক বছরে ভারতের বৃদ্ধি অনুমান করা হয়েছে ৯.২ শতাংশ যা বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতিগুলির মধ্যে সর্বোচ্চ।

৩) বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য করছাড়ের পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে।

৪) কো-অপারেটিভগুলির ক্ষেত্রে সারচার্জ ১২ শতাংশ থেকে কমে ৭ শতাংশ করা হবে ১ থেকে ১০ কোটি আয়ের জন্য।

৫) নতুন উৎপাদন সংস্থাগুলির জন্য কর্পোরেট কর ১৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হল ৩১ মার্চ, ২০২৩ পর্যন্ত।

৬) জাতীয় পেনশন প্রকল্পে করছাড় বৃদ্ধি পেয়ে হল ১৪ শতাংশ।

৭) যেকোনো দীর্ঘমেয়াদি মূলধন লাভ স্থানান্তরের উপর সারচার্জ ১৫ শতাংশ সীমাবদ্ধ করা হয়েছে।

৮) কর্পোরেটের সাথে করের হারের সমতা আনতে সমবায়গুলির জন্য নূন্যতম বিকল্প করের হার কমিয়ে ১৮.৫ শতাংশ করা হয়েছে।

৯) কর সুবিধা পাওয়ার জন্য স্টার্টআপগুলির অন্তর্ভুক্তির মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে ৩১ মার্চ, ২০২৩ করা হয়েছে।

১০) তালিকাবিহীন শেয়ারের ওপর সারচার্জ ২৮.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৩ শতাংশ করা হয়েছে।

১১) বাজেটে নতুন কর্পোরেট কর ব্যবস্থার অধীনে প্রাপ্ত সুবিধাগুলির মেয়াদ ৩১ মার্চ, ২০২৪ পর্যন্ত করা হয়েছে।

১২) লেনদেনের ওপর নজর রাখতে ডিজিটাল সম্পদ ব্যবহার করে অর্থপ্রদানের ক্ষেত্রে আরও ১ শতাংশ টিডিএস কাটা হবে।

১৩) ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে লাভের উপর ৩০ শতাংশ কর ধার্য করা হবে।

১৪) কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ট্যাক্স ডিডাকশনের সীমা ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৪ শতাংশ করা হয়েছে।

১৫) রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সামাজিক নিরাপত্তাগত সুবিধাগুলি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সমান হবে

১৬) লাইফ ইনসিউরেন্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া বা এলআইসি আইপিও-র কাজ চলছে এবং তা শীঘ্রই বাজারে আসবে।

১৭) আরবিআই এর অধীনে ডিজিটাল মুদ্রা চালু করা হবে। ক্রিপ্টোকারেন্সির মত ব্লকচেন পদ্ধতিতে মুদ্রা লেনদেনের তথ্য রাখা হবে।

১৮) করদাতারা ২ বছরের মধ্যে আপডেট রিটার্ন ফাইল করতে পারেন। ভুল সংশোধন করে ২ বছরের মধ্যে আপডেট রিটার্ন ফাইল করা যাবে।

১৯) আগামী তিন বছরে ভারতে ৪০০ টি নতুন শক্তিশালী ও দক্ষ "বন্দে ভারত" ট্রেন তৈরি করা হবে।

২০) রেল সেক্টরে "এক স্টেশন, এক পণ্য" প্রকল্পের বিকাশ করা হবে। এরফলে স্থানীয় পণ্য পরিবহনের জন্য রেলপথ অত্যন্ত সুবিধাজনক উপায় হয়ে উঠবে।

২১) আরও ১ কোটি পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর উজ্জ্বলা প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হবে। এলপিজির মাধ্যমে দরিদ্র পরিবারগুলিতে পরিষ্কার রান্নার জ্বালানি সরবরাহের লক্ষ্যে এই প্রকল্প চালু করা হয়েছিল।

২২) বুকিং এবং কো অর্ডিনেশনের জন্য প্রাকৃতিক গ্যাস ট্রান্সমিশন সেক্টরে একটি স্বাধীন সিস্টেম অপারেটর স্থাপন করা হবে।

২৩) উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন সৌর মডিউল তৈরি করার লক্ষ্যে উৎপাদন ক্ষেত্রে লগ্নির জন্য অতিরিক্ত ১৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

২৪) দেশের মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য, সক্ষম অঙ্গনওয়াড়ি বা মিশন শক্তির মতো প্রকল্প নেওয়া হবে। আগামীদিনে সক্ষম অঙ্গনওয়াড়ি আওতায় ২ লাখ অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

২৫) তথ্যকেন্দ্র এবং শক্তি সঞ্চয় পরিকাঠামোর ক্ষেত্রকে একটি সুসংগত তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

২৬) ২০২২ সালের মধ্যে প্রতিটি পোস্ট অফিস কোর ব্যাঙ্কিং করতে পারবে। প্রায় দেড় লক্ষ পোস্ট অফিসকে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার অধীনে আনা হয়েছে। এই পোস্ট অফিসগুলিতে নেট ব্যাঙ্কিং, অনলাইন ব্যাঙ্কিং এবং এটিএমের ইত্যাদি সুবিধা পাওয়া যাবে।

২৭) প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ২০২২-২৩ সালের মধ্যে বাড়ি পাবেন ৮০ লাখ পরিবার। এই প্রকল্পে কেন্দ্র সরকার, রাজ্য সরকারগুলির সাথে যৌথভাবে কাজ করবে। এই প্রকল্পের জন্য ৬০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

২৮) ৫ টি নদী সংযোগ প্রকল্প চূড়ান্ত করা হয়েছে।

২৯) কৃষির জন্য আর্থিক স্টার্টআপ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের অধীনে ফসল কেনার জন্য ২ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে।

৩০) রাসায়নিক মুক্ত প্রাকৃতিক চাষ, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বাজরা পণ্যের ব্যান্ডিং এবং ফসল মূল্যায়নের জন্য কিষান ড্রোন ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।

৩১) পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ এবং পর্যটন ও লজিস্টিক ব্যবস্থার উন্নয়নে জাতীয় রোপওয়ে উন্নয়নের অধীনে পার্বতমালা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে ৭ টি রোপওয়ে নেটওয়ার্ক তৈরি করা হবে।

৩২) স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য একটি ওপেন প্লাটফর্ম তৈরি করা হবে। আইআইটি হায়দরাবাদ থেকে প্রযুক্তিগত সহায়তা নিয়ে নিমহ্যান্স (NIMHANS) এর সঙ্গে জাতীয় টেলি মানসিক স্বাস্থ্য প্রোগ্রাম চালু করা হবে।

৩৩) উত্তর-পূর্বের জন্য পিএম ডেভলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ, যুব ও মহিলাদের জীবিকা অর্জনে সক্ষম করার জন্য ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

৩৪) ইন্টারনেট, টিভি, মোবাইল এবং রেডিওর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বিদ্যা যোজনার অধীনে ১-১২ শ্রেণীর পরিপূরক শিক্ষার জন্য টিভি চ্যানেল চালু করা হবে।

৩৫) অ্যানিমেশন, ভিজুয়াল ইফেক্ট এবং গেমিং ইত্যাদি সেক্টরে দারুণ সম্ভাবনা দেখছে সরকার। এই জন্য এইসমস্ত ক্ষেত্রকে একত্রিত করে AVGC এর উন্নয়নের একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হবে।

৩৬) প্রতিরক্ষা আমদানি হ্রাস করা হবে। দেশি অস্ত্র নির্মাতাদের কাছ থেকে সেনাবাহিনী ৬৮ শতাংশ সামরিক সরঞ্জাম কিনবে।

৩৭) ২০৪৭ সালের কথা মাথায় রেখে নগর পরিকল্পনা উন্নয়নের জন্য উচ্চস্তরে কমিটি গঠন করা হবে এবং পরিবেশের কথা ভেবে বৈদ্যুতিক যানবাহনের পরিকাঠামো উন্নত করা হবে।

৩৮) সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রকের জন্য কেন্দ্রীয় বাজেটে ৫০২০.৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে।

৩৯) কাটা এবং পালিশ করা হীরে এবং রত্নপাথরের ওপর আমদানি শুল্ক ৭.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।

৪০) ২০২২-২৩ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটে সরকারের ব্যয় বাবদ বরাদ্দ ৭.৫ লক্ষ কোটি টাকা করা হয়েছে। আগের বছর এর পরিমাণ ছিল ৫.৫ লক্ষ কোটি টাকা।