‘অশালীন’ তকমা দিয়ে আহমেদাবাদে ‘কামসূত্র’ পোড়াল বজরং দল
হিন্দু সংগঠনের হাতেই বিপন্ন হিন্দু সংস্কৃতি
চতুর্থ শতকে ভারতীয় দার্শনিক বাৎস্যায়নের হাত ধরে সৃষ্টি হয়েছিল সংস্কৃত গ্রন্থ ‘কামসূত্র’। এটি কেবলমাত্র সংস্কৃত গ্রন্থই নয়, এটি প্রাচীন ভারতবাসীর উন্মুক্ত এবং উন্নত সংস্কৃতির এক অসামান্য নিদর্শনও বটে। তবে এবার সেই উৎকৃষ্ট সংস্কৃতিই ধ্বংস করতে উদ্যত হল এদেশের সংস্কৃতি বাঁচানোর ‘ঠেকা’ নিয়ে রাখা বজরং দল। ‘অশালীন’ আখ্যা দিয়ে, আহমেদাবাদে এক বইয়ের দোকানের সামনে কামসূত্রের সংকলন পোড়াল হিন্দু শাখার কিছু কর্মী।
ঘটনাটি ঘটে শনিবার রাত্রে। গুজরাটের সারখেজ-গান্ধীনগর হাইওয়ের কাছে ‘ল্যাটিটিউড বুকস্টোরস’ নামে এক বইয়ের দোকানের সামনে বজরং দলের কর্মীদের এই কাণ্ড ঘটাতে দেখা যায়। ঘটনার পরেই সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভিডিওতে দেখা গেছে, সংগঠনের কর্মীরা ‘জয় শ্রী রাম’ এবং ‘হর হর মহাদেব’ ধ্বনি দিতে দিতে গ্রন্থটির সংকলন পোড়াচ্ছেন। এ বিষয়ে বজরং দলের উত্তর গুজরাট শাখার প্রধান জ্বলিত মেহেতার বক্তব্য, তাঁদের কাছে অভিযোগ এসেছিল, এই বইতে হিন্দু দেবতা কৃষ্ণের চরিত্রের সম্পর্কে কুরুচিকর কথা লেখা আছে। তিনি আরও বলেন, এই ঘটনার মাধ্যমে তাঁরা সকল বইবিক্রেতাদের সাবধান করতে চান, তাঁরা যেন তাঁদের দোকানে ‘হিন্দু ভাবাবেগে’ আঘাত লাগে এমন কোনও গ্রন্থ না রাখেন। নতুবা, তাঁদের দোকানেও একই কাণ্ড ঘটাবেন তাঁরা।
সূত্রের খবর, প্রায় ১২ জন হিন্দুত্ব সংগঠনের কর্মীরা সেদিন দোকানে ঢোকে এবং এর পরেই তারা কামসূত্রের সংকলন পোড়াতে শুরু করে। তবে তারা বলপূর্বক দোকানে ঢুকেছিল কিনা সে বিষয়ে এখনও সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। যদিও এই প্রথম নয়, ২০১৭ সালেও কামসূত্র এবং খাজুরাহের মূর্তি নিয়ে ছাটারপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিল তারা। এই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি। বজরং দলের এরূপ কার্যকলাপে নিন্দামুখর নেটাগরিকরা। অনেকের কথায়, হিন্দু সংগঠনের হাতেই আজ বিপন্ন হিন্দু সংস্কৃতি।