নতুন অশোক স্তম্ভের সিংহরা হিংস্র! মোদির নতুন প্রতীক নিয়ে শুরু হয়েছে ক্ষোভ
বিরোধীরা দাবি জানিয়েছেন, সারনাথের মন্দিরের যে অশোক স্তম্ভকে ভারতের জাতীয় প্রতীক হিসাবে নেওয়া হয়েছিল, সেটা অত্যন্ত শান্ত
নতুন অশোক স্তম্ভের সিংহদের শ্বদন্ত দেখা যাওয়া নিয়ে এবারে নতুন করে বিতর্কে শাসক দল বিজেপি। বিরোধীদের প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি নতুন সংসদ ভবনের মাথায় যে জাতীয় প্রতীকের উন্মোচন করেছেন আজ সকালে, সেটি আসলে সারনাথের মন্দিরের অশোক স্তম্ভের থেকে অনেকটাই আকারে প্রকারে আলাদা। এবং পরোক্ষভাবে মোদি সরকারের চরিত্র ফুটিয়ে তুলছে এই বিশেষ অশোক স্তম্ভ। বিহারের বিরোধীদল রাষ্ট্রীয় জনতা দল একটি টুইট করে লিখেছে, সারনাথের মন্দিরের যে অশোক স্তম্ভকে ভারতের জাতীয় প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছিল, তার সিংহটি অনেকটাই শান্ত স্বভাবের। কিন্তু তার তুলনায় নতুন সংসদ ভবনের উপরের অশোক স্তম্ভের মূর্তিটি অনেকটাই হিংস্র প্রকৃতির। এই মূর্তিটি দেখে মনে হচ্ছে যেন গিলে খেতে আসছে। কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করে আরজেডি বলেছে, প্রতীককে সাধারণত চরিত্র বোঝানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। এই কারণে মোদি সরকারের প্ৰতীকেও তার চরিত্র একেবারে স্পষ্ট।
তবে শুধুমাত্র আরজেডি একা নয়, এই প্রতীক বিতর্কে কেন্দ্রের সমালোচনা করেছেন আইনজীবী তথা সমাজকর্মী প্রশান্ত ভূষণ। সারনাথের সিংহকে মহাত্মা গান্ধীর মত শান্ত এবং নতুন সংসদ ভবনের অশোক স্তম্ভের সিংহকে নাথুরাম গডসের মত উগ্র বলে তুলনা করেছেন প্রশান্ত ভূষণ। সঙ্গে টুইট করে লিখেছেন, এটাই মোদির নতুন ভারত! অন্যদিকে অশোক স্তম্ভের সমালোচনায় যোগ দিয়েছেন কালী বিতর্কে স্পটলাইটে থাকা তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও। অশোক স্তম্ভ বিতর্কে যদিও তিনি কোন মন্তব্য করেননি। স্রেফ পুরনো এবং নতুন প্রতীকের দুটি ছবি পাশাপাশি রেখে একটি কোলাজ করে শেয়ার করেছেন।
আম আদমি পার্টির রাজ্যসভার সদস্য সঞ্জয় সিংহ টুইট করে জানতে চেয়েছেন, 'আমি ১৩০ কোটি ভারতীয়র কাছে জানতে চাই, এভাবে জাতীয় প্রতীক বদলে দেবার চেষ্টা কি দেশদ্রোহ নয়?' তৃণমূল রাজ্যসভার সদস্য এবং প্রসার ভারতী প্রধান জহর সরকার দু'রকম প্রতীকের ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, 'জাতীয় প্রতীকের অবমাননা। বাঁদিকে আমাদের আসল প্রতীক। রাজকীয় অথচ অনেকটাই কমনীয় সিংহ। মোদির সংস্করণটি অকারণ উগ্রতায় পরিপূর্ণ। অবিলম্বে এটিকে বদলানোর প্রয়োজন।'
যদিও বিরোধীদের এই সমালোচনায় তেমন একটা গুরুত্ব দিতে চায়নি ভারতীয় জনতা পার্টি। তাদের বক্তব্য, বিরোধীরা কেন্দ্রের সমালোচনার একটি নতুন বিষয় খুঁজে পেয়েছে। এর থেকে বেশি কিছু নয়। অন্যদিকে নতুন জাতীয় প্রতীকের শিল্পী সুনীল দেওরেও তার সাফাইয়ে বলেছেন, "কোন উগ্র মনোভাব থেকে প্রভাবিত হয়ে ওই মূর্তি তৈরি করা হয়নি। তিনি মূর্তিগুলি নিজের মতো করে বানিয়েছেন। তবে তার আগে সারনাথের অশোক স্তম্ভ নিয়ে গবেষণা করেছিলেন।" সুনীলের যুক্তি, নেটমাধ্যমে বিরোধীরা যে ছবিটি দেখিয়ে আপত্তি তুলেছেন, সেটি ছবি তোলার কৌনিকতায় অন্যরকম দেখাচ্ছে। নিচ থেকে ছবি তোলার কারণে সিংহের শ্বদন্তগুলি দেখা যাচ্ছে।