তৈরি হচ্ছে বাড়িরও আধার, সব ঠিকানার ১০ সংখ্যার পৃথক ইউনিক কোড
কেন্দ্রের নয়া সিদ্ধান্তে বাড়ছে জল্পনা
সুকুমার রায় কতকাল আগে বলে গেছেন, "গোঁফের আমি গোঁফের তুমি, তাই দিয়ে যায় চেনা" অর্থাৎ গোঁফ দিয়েই মানুষের পরিচয়। আর বর্তমানে মানুষের পরিচয় ১৪ সংখ্যার ইউনিক নম্বর। আধার নম্বর (Aadhaar) দিয়েই মানুষের 'পেহচান'। এবার বাড়িরও তৈরি হবে ১০ সংখ্যার 'ডিজিটাল অ্যাড্রেস কোড'। ডিজিটাল পদ্ধতিতে যেভাবে মানুষের হরেক তথ্য জমা থাকে আধারে, ঠিক তেমনি প্রত্যেক বাড়িরও আলাদা তথ্য থাকবে এই ১০ সংখ্যক ইউনিক নম্বরে। কেন্দ্রের যোগাযোগ মন্ত্রক এমনই ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে বলে সূত্রের খবর।
কী এই 'ডিজিটাল অ্যাড্রেস কোড'? বিষয়টির সঙ্গে আধার ব্যবস্থার অনেক মিলের কথা বলছে কেন্দ্র। যেভাবে আধার নম্বর দিয়ে একজন মানুষের যাবতীয় খুঁটিনাটি তথ্য জানা যায়, ঠিক সেইভাবে কোন বাড়ির খুঁটিনাটিও এই নম্বর থেকে জানা যাবে। প্রতিটি ঠিকানায় এই ১০ সংখ্যার কোডটি ব্যবহার করা যাবে। প্রতিটি বাড়ির জন্য আলাদা আলাদা কোড থাকবে। যেভাবে সফটওয়্যার 'কিউআর' কোড পড়তে পারে, এই ১০ সংখ্যার ইউনিক কোড নম্বরও পড়তে পারবে। প্রতিটি বাড়ি, ফ্ল্যাট, অফিসের জন্য থাকবে আলাদা কোড। এমনকী একটি বাড়িতে যদি আলাদা পরিবার বসবাস করে তাদের জন্য থাকবে আলাদা কোড নম্বর।
এই ইউনিক কোড নম্বর চালু হলে সুবিধা কী? কেন্দ্রের যুক্তি প্রত্যেকে আধার নম্বর তৈরির সময় বাড়ির ঠিকানা দিয়ে থাকেন। অনেক সময় সেই ঠিকানায় সেই ব্যক্তি থাকেন না। যেকোন প্রয়োজনে সেই ব্যক্তিকে খুঁজে পেতে প্রশাসনের যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। এই ইউনিক কোড নম্বর চালু হলে সেই ব্যক্তি যেখানে যান কিংবা বাড়ি ভাড়া পরিবর্তন করুক, সেই নতুন ঠিকানার ইউনিক কোড হবেই তার নম্বর। তাছাড়া এই ব্যবস্থা চালু হলে নির্দিষ্ট ঠিকানায় চিঠিপত্র যাওয়া কিংবা ই-কমার্স দুনিয়ার কাজও সহজ হবে। এখানেই শেষ নয় বিমা কিংবা ব্যাঙ্কিং পরিষেবায় যদি সঠিক বাড়ির পরিচয় প্রয়োজন হয়, তাহলে সহজেই যেকোন দফতর তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে। এমনকী ভুয়ো ঠিকানা ব্যবহার করে যেভাবে জালিয়াতি বাড়ছে, তা-ও কমতে পারে বলে কেন্দ্রের ধারণা। আধার যেভাবে জনজীবনে বিপ্লব এনেছে, বাড়ির এই ইউনিক কোড নম্বরও তেমন বিপ্লব আনতে চলেছে বলে আশাবাদী কেন্দ্র।
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন একাংশ। করোনা অতিমারির আবহে যেভাবে দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে, এখন এমন ইউনিক কোড নম্বর তৈরি করে হাজার হাজার কোটি টাকার খরচ করা অযৌক্তিক। তবে পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে, তা সময়ই বলবে বলছেন ওয়াকিবহাল মহল।