জল্পনা আগে থেকেই চলছিল। অবশেষে শনিবার ভারতীয় ক্রিকেটের মসনদে শেষ হলো বিরাটের আগ্রাসী যুগ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজে হারের পর বড় চমক দিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারার পরে ভারতীয় টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন বিরাট কোহলি। এর আগে গত বছর টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কত্ব ছেড়ে ছিলেন বিরাট। এরপরে থেকে একদিনের দলের অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বিসিসিআইয়ের তরফ থেকে। তিনি এতদিন পর্যন্ত শুধুমাত্র টেস্ট দলের দায়িত্ব সামলেছিলেন। কিন্তু এবারে টেস্ট দলের দায়িত্ব তিনি ছেড়ে দিয়ে সম্পূর্ণরূপে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব মুক্ত হলেন।
ইনস্টাগ্রামে একটি বিরাট পোস্ট লিখে বিরাট কোহলি বললেন, 'দলকে সঠিক দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য এই সাত বছরের প্রতিটা দিন আমি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি। নিরবিচ্ছিন্ন অধ্যাবসায় বজায় রেখে আমি সততার সঙ্গে সেই কাজ করেছি। কোথাও আমি কোনরকম ফাঁক থাকতে দিইনি। সবকিছুকে কোন না কোন সময় থামতে হয়। আমার কাছে ভারতীয় দলের টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়ার সময় এসে গিয়েছে। দীর্ঘ যাত্রাপথে প্রচুর সাফল্য এসেছে। একাধিকবার ব্যর্থতারও সম্মুখীন হয়েছি। কিন্তু আমি কখনো প্রয়াস বা আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি রাখিনি। আমি যা কিছু করি তাতে বরাবর ১২০ শতাংশ উজাড় করে দেওয়া তত্বে বিশ্বাস করি। তবে আমি যদি সেটা করতে না পারি, তাহলে আমি ভালোভাবে জানি সেটা করা আমার পক্ষে ঠিক হবে না। আমার হৃদয়ে পুরোপুরি স্বচ্ছতা রয়েছে। আমার দলের প্রতি আমি কখনো অসৎ হতে পারি না।'
কোহলি আরো লিখলেন, 'এত দীর্ঘ সময় ধরে আমায় দেশের নেতৃত্ব দেবার সুযোগ প্রদানের জন্য বিসিসিআইকে ধন্যবাদ জানাই। আরো বেশি করে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার সতীর্থদের, যারা প্রথম দিন থেকে দলকে নিয়ে আমার যে লক্ষ্য ছিল তা পূরণের ক্ষেত্রে সঙ্গী হয়েছেন। তারা কোনো পরিস্থিতিতে হাল ছাড়েননি। তোমরা এই যাত্রাটাকে আরও সুন্দর এবং স্মরণীয় করে তুললে।' টেস্ট ক্রিকেটে সাফল্যের কথা উল্লেখ করে তিনি রবি শাস্ত্রী এবং মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
রবি শাস্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিরাট কোহলি লিখলেন, 'রবি ভাই (রবি শাস্ত্রী) এবং সকল সাপোর্ট স্টাফরা এই গাড়ির ইঞ্জিন হয়ে কাজ করেছেন এতদিন ধরে। যারা লাগাতার টেস্ট ক্রিকেটে আমাদের উপরের দিকে নিয়ে গিয়েছেন। সেই লক্ষ্যকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তারা।' এছাড়াও প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে ধন্যবাদ জানিয়ে লিখলেন, 'শেষে মহেন্দ্র সিং ধোনিকে বড়োসড়ো ধন্যবাদ জানাতে চাই, যিনি অধিনায়ক হিসেবে আমার উপরে ভরসা রেখে ছিলেন এবং বিশ্বাস করেছিলেন যে, আমি ভারতীয় ক্রিকেট কে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।' তবে নিজের দীর্ঘ বার্তায় একবারও ভারতীয় দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড় এবং বিসিসিআইয়ের চেয়ারপারসন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এর নাম নিলেন না বিরাট কোহলি। সে বিষয়টিও বিরাট কোহলি ভক্তদের নজরে এসেছে। তাহলে কি বিসিসিআই এবং রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ থাকার কারণেই এত বড় সিদ্ধান্ত নিলেন বিরাট কোহলি? প্রশ্ন টা রয়েই গেল।