দুর্বল ক্যাপ্টেন্সি কি কলকাতাকে ডোবাল? আন্দ্রে রাসেলের হাতে দু ওভার থাকা সত্ত্বেও বাকিদের দিয়ে বোলিং দলের দুর্বল অধিনায়কত্ব স্পষ্ট হয়। কলকাতার চার ম্যাচে তিনটি জয়, আর অপরদিকে তিন ম্যাচে একটি। তবে আজ দিল্লি তাদের ব্যাটিং অর্ডারে শুরু থেকেই যেভাবে দাপট দেখাল, তাতে অপ্রতিরোধ্য কলকাতার কাছে বড় চ্যালেঞ্জ তো বটেই।
আজ টসে জিতে কলকাতা বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। শুরু থেকেই আজ দিল্লির দাপট চোখে পড়ার মতো। পাওয়ার প্লে-তে নির্ধারিত ৬ ওভারে ৬৮ রান, তা-ও আবার বিনা উইকেটে। মাঠে তখন পৃথ্বী শ (Prithvi Shaw) এবং ডেভিড ওয়ার্নার (Devid Warner)। দিল্লি শিবিরে প্রথম ধাক্কা নবম ওভারের চতুর্থ বলে। যদিও ততক্ষণে পৃথ্বী শ'য়ের দুরন্ত অর্ধশতরান। মাত্র ২৯ বলে ৫১ রান। কলকাতার তো নাকানি-চোবানি অবস্থা। ১৩ তম ওভারের পঞ্চম বলে দিল্লির অধিনায়ক ঋষভ পন্থ (Rishabh Pant) প্যাভিলিয়নে। সফলতা পেলেন আন্দ্রে রাসেল। তখনও ওয়ার্নার দুরন্ত ফর্মে। অবশেষে ১৭ তম ওভারের চতুর্থ বলে উমেশ যাদবের শিকার হলেন ওয়ার্নার। যদিও দলের জন্য ৪৫ বলে ৬১ রান গড়ে দিল্লিকে অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে গেছেন তিনি।
প্রশ্ন উঠেছে, ডেথ ওভারে কলকাতার চূড়ান্ত ব্যর্থতা ভোগাবে না তো কলকাতাকে? ১৯ তম ওভারে উমেশ যাদবের ২৩ রান কিংবা ২০ তম ওভারে ১৬ রান দিল্লির বিরাট স্কোর করতে কোন অসুবিধা হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে আন্দ্রে রাসেলকে দিয়ে মাত্র ২ ওভার কেন বল করানো হল? ২ ওভারে ১৬ রান দিয়ে ১ উইকেট পেয়েও রাসেলকে দিয়ে আর বল করানো হয়নি। পাশাপাশি অতিরিক্ত ১৬ রান তো আইপিএলের ক্ষেত্রে বাড়তি বোঝা। সব মিলিয়ে কলকাতার সামনে ২১৬ রানের বিরাট টার্গেট নাইট শিবিরে বাড়তি প্রেসার তো বটেই।
ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে শুরু থেকেই নড়বড়ে নাইট শিবির। এত বিরাট রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে খেলতে নামলে শুরু থেকেই যে দাপুটে ইনিংস প্রয়োজন, নাইট শিবিরে তা দেখা গেল না। পাওয়ার প্লে-তে ২ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৪৩ রান সংগ্রহ। হ্যাঁ, তারপর দলের অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার এবং নীতিশ রানার অনবদ্য ইনিংস কলকাতাকে অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে যায়। যদিও এই দুই তরুণ ব্যাটারের অশ্বমেধের ঘোড়া থামিয়ে দিলেন ললিত যাদব। নীতিশ রানার আউট থামিয়ে দেয় দু'জনের দৌড়। নাইট শিবিরে অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার ৩৩ বলে ৫৪ রানের অনবদ্য ইনিংস খেললেন। তবে অপরপক্ষে দিল্লির অধিনায়ক ঋষভ পন্থের অনবদ্য স্ট্যাম্পিং-এ আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান শ্রেয়স আইয়ার।
মাঠে তখন আন্দ্রে রাসেল এবং স্যাম বিলিংস। ম্যাচের ভাগ্য অনেকটাই তাঁদের হাতে। যদিও বেশিক্ষণ মাঠে থাকতে পারেননি তিনি। এরপর পরপর উইকেট। আগের ম্যাচের নায়ক প্যাট কামিন্স তেমন কিছুই করতে পারেননি। ব্যাটে-বলে চূড়ান্ত ব্যর্থ কলকাতা। না, আজকের ম্যাচে রাসেল ঝড় দেখা যায়নি। এত বড় রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে খেলতে নেমে অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার ছাড়া তেমন কাউকে বড় ইনিংস খেলতে দেখা যায়নি। কলকাতাকে হারিয়ে দ্বিতীয় জয় পেল দিল্লি ক্যাপিটালস।