রোনাল্ডো ইজ ব্যাক! অভিষেক ম্যাচেই সেই তরুণ বয়সের মতই লাল জার্সিতে ঝড় তুললেন সি আর সেভেন। ১২ বছর পরে আবারো লাল জার্সিতে ফিরলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। সেই ওল্ড ট্রাফোর্ড, সেই দর্শক, সেই সাত নম্বর জার্সি। সবুজ মাঠে আবারো জাদু দেখালেন ৩৬ বছর বয়সী যুবক ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। একই চেনা ৭ নম্বর জার্সিতে বিপক্ষের গোলপোস্টে পরপর দুটো জোরালো শট, গোল!!! নিউক্যাসেল কে ৪-১ গোলে দুর্মুষ করে লীগ তালিকার শীর্ষে আবারো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
মাঝখানে কেটে গিয়েছে একটা যুগ। কখনো রিয়েল মাদ্রিদ, তো কখনো জুভেন্তাস। কিন্তু ১২ বছর পরেও তার মহিমা কিন্তু একটুও ক্ষুন্ন হয়নি। তাকে নিয়ে লাল জার্সি সমর্থকদের উন্মাদনাও কোন অংশে কম হয়নি। ওল্ড ট্রাফোর্ডে এখনো তিনি সমান জনপ্রিয়। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এর প্রত্যেকটি সমর্থকের কাছে তিনি ঘরের ছেলে। সম্ভবত সেই কারণেই, যুবক বয়সের ভালোবাসা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে দ্বিতীয় অভিষেক ম্যাচেও তাকে নিয়ে উন্মাদনা চরমে। গ্লোরি গ্লোরি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকেও যেন ছাপিয়ে গেল তার নামের জয়ধ্বনি। কানায় কানায় পূর্ণ মাঠে পুত্রসম তারকার খেলা দেখতে উপস্থিত হলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অহংকার স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন।
আর অভিষেক ম্যাচেই আগুন ঝরালেন রোনাল্ডো। অভিষেক ম্যাচেই জোড়া গোল করে এই তালিকার একেবারে শীর্ষে নিয়ে এলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে । ম্যাচের শুরু থেকেই যেন পুরো স্টেডিয়ামে ছেয়ে গিয়েছিলেন রোনাল্ডো। কিন্তু তবুও, প্রথম গোলটির জন্য ম্যানচেস্টারের জনতাকে অপেক্ষা করতে হলো প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত। নিরাশ করলেন না রোনাল্ডো। প্রথমদিকে মনে হচ্ছিল নিউক্যাসেলের কঠিন রক্ষণ ভেঙে ফেলা খুব একটা সহজ হবে না রেড ডেভিলদের পক্ষে। কিন্তু, তখনই একটা ম্যাজিক করলেন ম্যান ইউয়ের ঘরের ছেলে। প্রথমার্ধের একেবারে শেষ মুহূর্তে রিবাউন্ড শট সোজা জালে জড়িয়ে দিলেন রোনাল্ডো। গোল!!! পুরো মাঠে যেন একটা বিদ্যুৎ বয়ে গেল। গোল করে দলকে এগিয়ে দিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সেই গোল শোধ করে নিউক্যাসলের হাভিয়ার মানকুইলো। ম্যাচের বয়স তখন ৫৬ মিনিট। দুর্দান্ত একটি গোল করে ম্যাচে সমতা ফিরিয়ে আনলেন নিউক্যাসেল স্ট্রাইকার। কিন্তু, তার মাত্র ছয় মিনিটের মাথাতেই আবারো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন সি আর সেভেন। নিজের ট্রেডমার্ক শট সোজা জালে জড়িয়ে দিয়ে আবারো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনলেন রোনাল্ডো। লুক শ এর বাড়িয়ে দেওয়া বল রিসিভ করে নিজেকে সেটআপ করে গোলরক্ষকের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে তিন কাঠির মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দিলেন বল।
জয় ছিল প্রায় নিশ্চিত। কিন্তু, রোনাল্ডোর আসাতে যেন বাকিরাও কিছুটা অক্সিজেন ফিরে পেয়েছিলেন। ৮০ মিনিটের মাথায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে তৃতীয় গোল করলেন ব্রুনো ফারনান্ডেজ। আর ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে দুর্দান্ত শটে ফিনিশ করলেন জেসি লিংগার্ড। যার ফলে ৪-১ গোলে নিউক্যাসেল কে উড়িয়ে দিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। চার ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে লীগ তালিকার একেবারে শীর্ষে উঠে এলো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। চেনা লাল জার্সিতে ঝড় তুললেন রোনাল্ডো। সারাবিশ্বের তামাম ম্যানইউ সমর্থকদের মুখে তখন একটাই কথা, সিউউউউউ….. রোনাল্ডো ইজ ব্যাক!!!