নোভাক জোকোভিচ, বিশ্ব টেনিসের জগতে এই মুহূর্তে যে সমস্ত তারকা একটা উজ্জ্বল নাম হয়ে রয়েছেন, তাদের মধ্যে একজন হলেন এই নোভাক জোকোভিচ। প্রায় ৩০ বছর আগের কথা, ১৯৯২ সালে টিভিতে পিট সাম্প্রসকে উইম্বলডনে প্রথম শিরোপা জিততে দেখে টেনিসের প্রেমে পড়েছিলেন সার্বিয়ার পাহাড়ি গ্রামের ছেলে নোভাক জোকোভিচ। ছেলেকে একখানা টেনিস খেলার ব্যাট কিনে দিয়েছিলেন তার বাবা। সেই থেকেই শুরু হলো তার স্বপ্নের দৌড়। টানা চারবার উইম্বলডন জয় থেকে শুরু করে ২১ বার গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা জেতা। পার করলেন টেনিস বিশ্বের সবথেকে জনপ্রিয় তারকা রজার ফেদেরারকে। আর সবকিছুই ঘটলো মা-বাবা এবং তার স্ত্রীর সামনে। উইম্বলডনের ৭ নম্বর খেতাব জিতে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত নোভাক জোকোভিচ।
যাকে দেখে টেনিসের প্রেমে পড়েছিলেন তাকেই এদিন ছুঁয়ে ফেললেন এই তারকা। তিনিও সাত বার উইম্বলডান জয়লাভ করেছিলেন। নোভাক জোকোভিচও এই নিয়ে সপ্তম উইম্বলডন করলেন জয়লাভ। এই কারণেই এই জয় তার কাছে অত্যন্ত বেশি স্পেশাল। ফাইনালে নিক কিরীয়সের দুর্দান্ত ব্যাকহ্যান্ড সামলে ঠান্ডা মাথায় পুরো লড়াইটা করলেন নোভাক জোকোভিচ। কিরীয়স গোটা ম্যাচে মেজাজ দেখালেন। কিন্তু সারবিয়ান এই তারকা সম্পূর্ণ নিশ্চুপ। তিনি সরাসরি বুঝিয়ে দিলেন অভিজ্ঞতাই কিন্তু শেষ কথা বলে। ম্যাচ শেষে টেনিস কোর্টে শুয়ে মেলে ধরলেন দুই হাত। এটাই ছিল তার সাফল্যের অভিব্যক্তি।
নোভাক জোকোভিচের বাবা পাহাড়ি গ্রামে একখানা রেস্তোরাঁ চালাতেন। ছেলের টেনিসের শখ দেখে তিনি সবসময় চেষ্টা করেছিলেন যেন তাকে সঠিক প্রশিক্ষণটা দেওয়া যায়। নোভাক জোকোভিচের আজকের দিনটাতে হয়তো সেই কথাটা মনে পড়ছিল বারবার। তাই ম্যাচ জিতেই সোজা এগিয়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলেন নিজের বাবাকে। তারপরেই এগিয়ে আসলেন ট্রফি নিতে। জীবনের ২১ তম শিরোপা আসতে পারতো গত জানুয়ারিতেই। কিন্তু তিনি করোনা টিকা নেবেন না বলে বেঁকে বসেছিলেন এবং এই কারণে খেলতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে। এরপর ফ্রেঞ্চ ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে হারের মুখ দেখতে হয়। কিন্তু কথায় বলে সব ভালো যার শেষ ভালো তার। তাই ২১ তম শিরোপাটি এলো বিশ্বের অন্যতম খ্যাতনামা একটি টুর্নামেন্ট থেকে, উইম্বলডন!