১১ নভেম্বর, ২০২৪
খেলা

Lionel Messi: পঁয়ত্রিশের আঙ্গিনায় ফুটবলের 'রাজপুত্র' লিওনেল মেসি

শৈশবের 'প্রতিপক্ষ' দুরারোগ্য ব্যাধিকে ড্রিবলিং করে জীবনের ম্যাচ জয়ী মেসি
Copa America 2021 Messi trophy Bengali News
চ্যাম্পিয়ন https://twitter.com/CopaAmerica
news-desk
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৩ জুন ২০২২
শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২২ ১৩:২৯

সাল ১৯৯৮, চিকিৎসক জানিয়ে দেন, এগারো বছরের কিশোরের শরীরে যে রোগ বাসা বেঁধেছে, তার কারণে ছেলেটির আগামী বলে কিছু থাকবে না। স্তব্ধ হয়ে ওঠে ছেলেটিকে ঘিরে তাঁর পারিপার্শ্বিকতা। সামান্য কারখানায় কর্মরত পিতা এবং সহায় সম্বলহীন মা তথা সমগ্র পরিবারের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে! যে ছেলের স্বপ্নালু চোখে ভরাট ছিল ফুটবলার হয়ে ওঠার স্বপ্ন, তাঁর জীবনে ঘনিয়ে এলো কোন বিপদ? ডাক্তার জানান, শিশুটি দুরারোগ্য গ্রোথ হরমোন ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোমে আক্রান্ত! চিকিৎসার জন্য প্রতিমাসে প্রয়োজন ৯০০ মার্কিন ডলার! কিন্তু এমন 'নুন আনতে পান্তা ফুরোয়' পরিবারে, কে হবেন ত্রাণকর্তা? খুব শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হয়ে গেল। এগারো বছরের সেই দুরারোগ্য 'প্রতিপক্ষ'কে জব্দ করবার জন্য, তখনই সেই ছেলেটির জীবনে নেমে আসেন কার্লেস রেক্সাচ নামের এক দেবদূত! কারণ, ছেলেটির নাম যে ছিল, লিওনেল আন্দ্রেস মেসি (Lionel Andrés Messi)।

মাত্র পাঁচ বছর বয়স থেকেই, ফুটবলকে নিয়ে তাঁর লাল নীল সংসারের ভিত তৈরি হওয়া শুরু হয়। বাবা জর্জ মেসির তত্ত্বাবধানেই হয় তাঁর হাতেখড়ি। খেলা শুরুর ছ' বছরের মধ্যেই জীবনের সবচেয়ে দুঃসহ প্রতিপক্ষের সম্মুখীন হতে হয়, বছর এগারোর ছোট্ট কিশোরটিকে। শারীরিক বিকাশ রোধ হতে থাকে তাঁর। একেবারেই দরিদ্র গোছের পরিবারে, তাঁর চিকিৎসার ভার বহন করা হয়ে ওঠে দুঃসাধ্য। কিন্তু ততদিনে কিশোরের পা, হয়ে উঠেছে জাদু-ছড়ি! তাঁর জাদুতে মেতে উঠেছেন তাঁর সমবয়সী থেকে শুরু করে, স্থানীয় ক্লাবের কর্তারা। সকলের কাছে তিনি হয়ে উঠেছিলেন, 'দ্য মেশিন অফ ৮৭' (The Mechine Of 87)। কারণ সেই সময়, সকলের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠা কাউকে, তাঁদের জন্মসাল-সহ নাম দেওয়া হতো। স্থানীয় ক্লাব রিভার প্লেট, এই কিশোর পায়ের জাদুতে মজে গেলেও, তাঁর চিকিৎসার ভার নেওয়া তাঁদের পক্ষে ছিল 'নৈব নৈব চ'! এমন সময়, তৎকালীন বার্সেলোনা ফুটবল ক্লাবের পরিচালক, কার্লেস রেক্সাচ (Carles Rexach) , মেসি নামক এই বিস্ময়টির সম্পর্কে অবগত হন। অবগত হন এই বিস্ময় বালকের জীবনের অন্তরায় হয়ে দাঁড়ানো 'প্রতিপক্ষ' দুরারোগ্য ব্যাধিটি নিয়ে। এক নৈশভোজের আয়োজন করে, মেসির সঙ্গে বার্সার চুক্তির চরম সিদ্ধান্তে উপনীত হন। হাতের কাছে তৎক্ষণাৎ কোনো কাগজ না থাকায়, একটি টিস্যু পেপারে সাক্ষর করেন মেসি।

মেসিকে চলে আসতে হয় স্পেনে। আর্জেন্টিনার রোজারিওতে পড়ে থাকে, তাঁর শৈশব, আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব, এমনকি কিশোরী প্রেমিকাও। স্পেনে এসে খোলে, মেসির জীবনে নতুন অধ্যায়ের ডায়েরির পাতা। আর্জেন্টাইন-স্পেনীয় নাগরিক হিসেবে ২০০৪ সালে মেসিকে স্পেনের অনূর্ধ্ব ২০ ফুটবল দলে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হলে, মেসি তা প্রত্যাখ্যান করেন। ২০০৪ সালে আর্জেন্টিনার হয়ে অনূর্ধ্ব ২০ দলের হয়ে প্যারাগুয়ের বিরুদ্ধে খেলায় অংশ নেন তিনি। ২০০৫ সালে দক্ষিণ আমেরিকার যুব চ্যাম্পিয়নশিপে আর্জেন্টিনা দলের হয়ে খেলেন, এবং আর্জেন্টিনা সেই খেলায় তৃতীয় স্থান দখল করে। ২০০৫ এ ফিফা যুব চ্যাম্পিয়নশিপে আর্জেন্টিনা বিজয়ী হয়, এবং মেসি ৬টি গোল করে প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় হিসেবে গোল্ডেন বল এবং গোল্ডেন বুটের পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৬ সালে, আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে অভিষেক ঘটে মেসির। ২০০৮ সালে অলিম্পিকে, দেশের হয়ে তাঁর মুকুটে সংযুক্ত হয় বিজয়ীর পালক।

লিওনেল মেসির পুরস্কার প্রাপ্তির ঝুলি, নেহাত হালকা নয়। টানা চারবারসহ মোট সাতবার ব্যালন ডি'অর জয়ের কৃতিত্ব ভরাট করেছে তাঁর ঝুলিকে। এই প্রাপ্তি ফুটবলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। তার পাশাপাশি, তিনি সর্বোচ্চ ছয়বার ইউরোপীয় গোল্ডেন বুটের অর্জনকারীও হয়েছেন। প্রসঙ্গত তাঁর পেশাদার ফুটবল জীবনের প্রায় পুরোটাই সম্পন্ন হয়েছে বার্সেলোনায়। যেখানে তিনি দশটি লা লিগা, চারটি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ মোট তেত্রিশটি শিরোপা জয় করেছেন, যা বার্সেলোনার ফুটবল ইতিহাসে তাঁর স্থান করেছে এক এবং অদ্বিতীয়। এছাড়াও একজন অপ্রতিরোধ্য গোলদাতা হিসেবে মেসির দখলে রয়েছে লা লিগায় সর্বোচ্চ সংখ্যক গোল (৪৪০)। কিংবদন্তী ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার, 'ব্ল্যাক পার্ল' পেলের (Pele) ৭৫৭ গোলের রেকর্ডকে অতিক্রম করেছেন আর্জেন্টাইন রাজকুমার।

মেসি এবং বিতর্ক, বরাবরই পরিপূরক হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমালোচকের বয়ানে, মেসি দেশের জার্সি গায়ে দিলে একেবারে নিঃস্ব! অপরদিকে ক্লাবের জার্সি গায়ে তিনি নাকি একাই রাজতন্ত্র সামলে নেন। কিন্তু পরপর টানা বিগত তিরিশটিরও অধিক ম্যাচ ধরে মেসি প্রমাণ করে চলেছেন, তাঁর নামের এই অপবাদ, বালির ঘড়ির মত! এখন সময় উল্টে গেছে। এখন শুন্য স্থান ভরে ওঠবার সময়। ২০২১ এ তাই কোপা আমেরিকা হোক, বা চলতি বছরে ফাইনালিসিমা, দুইয়েরই বিজয়ীর মুকুট পড়েছে মেসির আর্জেন্টিনা।

২০১৭ সালের, ৩০ জুন মেসি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, ছোটবেলার প্রেমিকা আন্তনেলা রকুইজোর (Antonela Roccuzzo) সঙ্গে। তাঁদের তিন সন্তান। থিয়াগো, মাতেও, এবং সিরো। মেসি যদি ফুটবলার নাও হতেন, প্রেমিক হিসেবে তিনি বিশ্বের পরিচিতি লাভ করতেনই। কারণ তাঁদের সম্পর্কের শুরু হয় মাত্র পাঁচ বছর বয়সে। যে পৃথিবী জুড়ে 'প্রেমের ফাঁদ পাতা ভুবনে' বেশিরভাগ মানুষেরই প্রতারণা বা বিচ্ছেদ দোসর হয়, সেই মেসিই এখনো সযত্নে যাপন করে চলেছেন, তাঁর সেই বাল্য প্রেমকে। তাঁদের সাংসারিক ছবি, প্রায়শই নেট মাধ্যমকে ভালোবেসে ভালো থাকবার রসদ প্রদান করে।

গত বছর আগস্ট মাসে মেসি তাঁর শৈশবের পাথেয়, বার্সেলোনার ফুটবল ক্লাব ত্যাগ করে, প্যারিস সেন্ট জার্মেইন ক্লাবে যুক্ত হন। এখন তাঁর 'পাখির চোখ' কাতার বিশ্বকাপ। তাঁর কাপ জেতা নিয়ে, তাঁর অনুগামীদের উচাটনের পারদও তুঙ্গে রয়েছে।

আরও খবর

বিজ্ঞাপন দিন

[email protected]

২৫ অক্টোবর

দেব-মিঠুনের জুটি ইতিমধ্যেই সুপারহিট

Dev mithun
২৫ অক্টোবর

ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি

Mimi new Saree good
২৮ সেপ্টেম্বর

গরম হোক বা শীত, বাচ্চার স্নান যেন না হয় বন্ধ

new born child
৪ সেপ্টেম্বর

জানুন সাধারণ এবং জনপ্রিয় মোদক বানানোর পদ্ধতি

Modak
৪ সেপ্টেম্বর

সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে স্রেফ অনন্যা পান্ডে

Ananya Shubman
৩১ আগস্ট

বৃহস্পতিবার সামনে এল বহু প্রতীক্ষিত ছবি খাদান-এর টিজার

Dev1
২৪ আগস্ট

শুভ জন্মদিন রাহুল, টিম পরিদর্শকের তরফ থেকে রইল শুভেচ্ছা

Rahul Dey own
২৩ আগস্ট

বর্ষা হোক আনন্দময়, গানে ও মজায় সামিল থাকুন সপরিবারে

Concert
১১ আগস্ট

কলেজ, হাসপাতাল কোথাও কি নিরাপত্তা নেই? প্রশ্ন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের

Mimi Chakraborty love
৮ আগস্ট

এখনও অদম্য নচিকেতা, নিমেষের মধ্যে ফুরিয়ে যাচ্ছে শো এর টিকিট

Nachiketa
২৪ জুলাই

মাত্র চব্বিশ বছর বয়সেই "মা" হয়েছিলেন সুস্মিতা সেন

Sushmita Sen daughter
৭ জুলাই

বরাদ্দ সময় পেরিয়ে গিয়ে হয়েছিল 'শাহীদ' ছবির শুটিং

Rajkumar Rao 1