কথায় বলে 'ওস্তাদের মার শেষ রাতে'! আইপিএলের (IPL) দ্বিতীয় পর্বে তাই করে দেখাল রাজস্থান রয়্যালস (RR)। সবাই যখন ধরেই নিয়েছে প্রীতি জিন্টার পাঞ্জাব কিংস (PBKS) জিতেই গেছে, তখন শেষ ওভারে বল হাতে এলেন বছর কুড়ির কার্তিক ত্যাগী (Kartik Tyagi)। পাঞ্জাবের দরকার ৬ বলে ৪ রান। হাতে ৮ টি উইকেট। তখন মাঠে খেলছে 'বিগ হিটার' নিকোলাস পুরান এবং এইডেন মারক্রাম। আর এখানেই কার্তিক ত্যাগীর বলের জাদু দেখল গোটা বিশ্ব। শেষ ওভারের প্রথম বল ডট, পাঞ্জাব কিংসের ব্যাটসম্যানদের বাড়ছে স্নায়ুর চাপ। দ্বিতীয় বলে ১ রান। দরকার ৪ বলে ৩ রান। আর তৃতীয় বলেই প্যাভিলিয়নে নিকোলাস পুরান। এলেন দীপক হুডা। চতুর্থ বল ডট বল। পঞ্চম বলে হুডা গেলেন প্যাভিলিয়নে। নাটকের পর নাটক। দর্শকদের বাড়ছে টানটান উত্তেজনা। সবশেষে দরকার ১ বলে তিন রান। মাঠে নামলেন ফ্যাবিয়েন অ্যালেন কিন্তু পাঞ্জাব আর ঘুরে দাঁড়াতে পারল না। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে জয় ছিনিয়ে নিল রাজস্থান রয়্যালস।
আইপিএলের দ্বিতীয় পর্বের প্রথম দুটি ম্যাচ ঠিক জমেনি। প্রথম ম্যাচে চেন্নাইয়ের ঘুরে দাঁড়ানোয় অনেকেই বাহবা দিয়েছিলেন ঠিকই, তবে মুম্বইয়ের ব্যর্থতা বড্ড চোখে পড়ার মতো। অন্যদিকে দ্বিতীয় ম্যাচে আরসিবিকে হেলায় হারায় কেকেআর। কিন্তু সময় গড়াতেই তৃতীয় ম্যাচে রাজস্থান রয়্যালস বনাম পাঞ্জাব কিংসের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখে মুগ্ধ গোটা ক্রিকেট বিশ্ব। শেষ বল পর্যন্ত স্নায়ুর উত্তেজনা নিয়ে আইপিএল অনেক দিন পরেই দেখা গেল। প্রথম থেকেই পাঞ্জাব কিংস সব দিক থেকেই এগিয়ে থাকলেও শেষ খেল দেখালেন রাজস্থান রয়্যালসের তরুণ বোলার কার্তিক ত্যাগী।
টসে জিতে পাঞ্জাব অধিনায়ক কে এল রাহুল ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। প্রথম ইনিংসে সমস্ত উইকেট খুঁইয়ে ২০ ওভারে রাজস্থান রয়্যালস রান তোলে ১৮৫। রাজস্থান রয়্যালসের দুই ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল এবং এভিন লুইস ভালো রান করেন। যশস্বী ৩৬ বলে ৪৯ এবং লুইস ২১ বলে ৩৬। তবে ১৮৫ রানের একটি বড় অবদান মহিপাল লোমরোর। তিনি ১৭ বলে ৪৩ রান করেন। পাঞ্জাবের বোলারদের মধ্যে সবথেকে সফল অর্শদীপ সিং। তিনি ৪ ওভারে ৩২ রানে ৫ উইকেট নেন। বাংলার দুই জোর গতির বোলার মহম্মদ শামি এবং ঈশান পোড়েল পাঞ্জাবের হয়ে বোলিং শুরু করেন। শামি ৩ উইকেট এবং আইপিএল-এ অভিষেক ম্যাচে ঈশান ১ উইকেট নেন।
অন্যদিকে পাঞ্জাবের ওপেনিং জুটি দারুণ খেলতে থাকে। ওপেনিং জুটিতেই চলে আসে ১২০ রান। কে এল রাহুল ৩৩ বলে ৪৯ এবং মায়াঙ্ক আগরওয়াল ৪৩ বলে ৬৭ রান করেন। এরপর মাঠে নামেন নিকোলাস পুরান এবং এইডেন মারক্রাম। তাঁরাও দারুণ সঙ্গত দেন। শেষ দু ওভারে প্রয়োজন ১০ রান। হাতে তখনও আট আটটি উইকেট। কিন্তু ক্রিকেট তো অনিশ্চয়তার খেলা। যেকোন সময় যেকোন কিছু ঘটতে পারে। তাই শেষ খেল দেখালেন রাজস্থান রয়্যালসের তরুণ বোলার কার্তিক ত্যাগী। আর পাঞ্জাবের জিতে যাওয়া ম্যাচ হারিয়ে এদিনের খেলার নায়ক হয়ে উঠলেন কার্তিক ত্যাগী।