রানের পাহাড় গড়া সত্বেও জিততে পারল না ভারত। একের পর এক ক্যাচ ড্রপ করার মাশুল গুনতে হলো রাহুল দ্রাবিড়ের ছেলেদের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচটি কার্যত হেলায় জিতে নিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এবং তার ফলে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে গেল ভারত। তবে ভারতের ব্যাটিং খারাপ ছিল না। সমস্যা ছিল ভারতের বোলিংয়ে। অত্যন্ত জঘন্য এবং সাধারন মানের বোলিং করলেন ভারতীয় বোলাররা। যে টিমটা দক্ষিণ আফ্রিকায় পাঠানো হয়েছিল, সেটা ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ টিম ছিল না। তারপর অনভিজ্ঞ অধিনায়ক ঋষভ পন্থ কোনভাবেই যেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং এর বিরুদ্ধে ভারতীয় বোলিংকে দাঁড় করাতে পারছিলেন না।
জঘন্য বোলিংয়ের কারণে প্রোটিয়া ব্যাটারদের চাপে ফেলেও শেষমেষ হেরে যেতে হলো ভুবনেশ্বর কুমারদের। রাসি ভ্যান দার দুসে এবং ডেভিড মিলার প্রায় অসম্ভবকে যে সম্ভব করে তুলবেন এটা কখনও ভাবা যায়নি। কিন্তু তাদের দুজনের বিধ্বংসী ব্যাটিং যেন ভারতীয় বোলারদের একেবারে ছিন্নভিন্ন করে দিল। ৫ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটে ম্যাচ পকেটে পুরে নিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
এবারের আইপিএলে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ফর্ম ছিল দুর্দান্ত। সেখান থেকেই এবারের মোকাবিলা শুরু করলেন ভারতীয় ব্যাটাররা। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের রীতিমতো শাসন করে ২০ ওভারে ২১১ রান তুলে নিলেন ভারতীয় ব্যাটাররা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এটাই ভারতের সর্বোচ্চ রান ছিল টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। পাশাপাশি দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে এটাই ছিল ভারতের সর্বোচ্চ রান। এই ম্যাচে দুর্দান্ত ফর্মে দেখা গেল ভারতীয় ব্যাটসম্যান ঈশান কিশানকে। ৭৬ রানের একটি বিধ্বংসী ইনিংস খেলে ভারতীয় ব্যাটিং কে কার্যত একটা দারুণ প্লাটফর্ম দিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তার যোগ্য সংগত দিয়েছিলেন রুতুরাজ গায়কোয়ার এবং শ্রেয়াস আইয়ার। যে গতিতে ঈশান কিশান এগোচ্ছিলেন, তাতে হয়তো এই ম্যাচে তার সেঞ্চুরি বাঁধা ছিল। কিন্তু, তার আউট হওয়ার পরেই ম্যাচের হাল ধরলেন গুজরাট টাইটানসকে চ্যাম্পিয়ন করা অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া এবং ভারতের অধিনায়ক ঋষভ পন্থ। বেশ কয়েকটি চার এবং ছক্কা হাঁকিয়ে ২১১ রানের একটা বিশাল স্কোর খাড়া করে ভারত।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজ শুরুর আগে থেকেই কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও, ব্যাটিংয়ের দিকে তেমন একটা প্রভাব দেখা যায়নি। ২১২ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম উইকেট পড়ে যায় মাত্র ২২ রানে। ব্যক্তিগত ১০ রানে যখন বাভূমা প্যাভিলিয়নে ফেরেন তখন অনেকেই মনে করেছিলেন আর হয়তো দক্ষিণ আফ্রিকা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেনা। এরপরে মাঠে নামতে না নামতেই মাত্র ২৯ রানে আউট হয়ে গেলেন ডোয়েন প্রিটোরিয়াস এবং ২২ রানে আউট হয়ে গেলেন কুইন্টন ডি কক। সেই সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বমোট রান ৮১।
এই জায়গা থেকেই রাসি ভ্যান দার ডুসে এবং ডেভিড মিলার দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস গোছানোর কাজ শুরু করেন। ২৯ রানে শ্রেয়াস আইয়ার এর হাত থেকে ক্যাচ পড়ে যায় রাসি ভ্যান দার ডুসের। তারপরে দুজনেই যেন একেবারে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন। হাতের বাইরে বেরিয়ে যাওয়া ম্যাচ জেতার মরিয়া চেষ্টা করেন দুই ব্যাটসম্যান। অসাধ্য সাধন করে ৫ বল বাকি থাকতেই দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য ম্যাচটি জিতে নিলেন মিলার (৬৪) এবং ডুসে (৭৫)।