ভারত-শ্রীলঙ্কা তিন ম্যাচের একদিনের সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে রুদ্ধশ্বাস মুহূর্তের সাক্ষী থাকল শ্রীলঙ্কার আর. প্রেমদাসা স্টেডিয়াম। প্রথম ম্যাচে ভারতবর্ষ একছত্ত্র অধিকার চালানোর পর অনেকেই ভাবেছিলেন, শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ম্যাচে তার যোগ্য প্রত্যুত্তর দেবে। সেই সন্দেহ সত্যি করে শ্রীলঙ্কা আজ ভারতের উপর মরন কামড় দেয়। যদিও শেষ লগ্নে দীপক চাহারের অসামান্য প্রদর্শনীর জেরে ভারত আজকের ম্যাচ ও সিরিজ উভয়েই ‘পকেটস্থ’ করে।
আজ টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত নেন শ্রী-লঙ্কার অধিনায়ক দাসুন শাঙ্কারা। লঙ্কার দুর্গে প্রথম ধাক্কা আসে ৭৭ রানের মাথায়। ত্রয়োদশ ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে পরপর মিনোদ ভানুকা(৩৬) ও ভানুয়াকা রাজাপক্ষের(০) মুল্যবান দুটি উইকেট তুলে নেন ইয়ুবেন্দ্রা চাহাল। পুরো ম্যাচ জুড়ে আর কোনও উল্লেখযোগ্য পার্টনারশিপ বানাতে পারেনি শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড়েরা। তবে তাঁর মধ্যেও ওপেনার আভিস্কা ফারনান্দেজের ৫০ রান ও আসালাঙ্কার-এর মূল্যবান ৬৫ রানের সুবাদে ৫০ ওভারের শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৭৫ রান তোলে লঙ্কাবাহিনী। তিনটি করে উইকেট তুলে নেন ভুবনেশ্বর কুমার ও চাহাল। দুটি উইকেট নিজের ঝুলিতে পুরে নেন দীপক চাহারও।
অন্যদিকে ব্যাটিং করতে নেমে প্রথমেই পৃথ্বী শ(১৩) এবং ইশান কিশান(১)-এর উইকেট হারায় ভারত। ২৯ রান করে হাসারাঙ্গার বলে নিজের উইকেট হারান শিখর 'গব্বর' ধাওয়ান। একটা সময় ভারতের জেতা প্রায় অসম্ভব মনে হলেও খেলার মোড় ঘোরাতে বেশি দেরি করেন নি সূর্য কুমার জাদভ(৫৩) এবং মনিশ পান্ডে(৩৭)। বড় ভাই হার্দিক(০) আজ হতাশ করলেও জেতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ৩৫ রানের(৫৪ বল) ইনিংস খেলেন ছোট ভাই কুনাল পান্ডিয়া। কিন্তু আজ ভারতের তুরুপের তাস ছিলেন দীপক চাহার। শেষে ব্যাট করতে নেমে ঝোড়ো ইনিংস ও মূল্যবান ৬৯(৮১) রানের সুবাদে ভারতকে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন চাহার। শেষ লগ্নে তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন ভুবনেশ্বর কুমার(১৯)। চাহার ও ভুবনেশ্বর কুমার মিলে সপ্তম উইকেটে ৮৪ রানের পার্টনারশিপ বানান, যা ভারতের ব্যাটিং ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। শেষ ওভারের প্রথম বলে চার মেরে সিংহবাহিনীর কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতে দেন চাহার। ৪৯.১ ওভারে ভারত ৭ উইকেটের বিনিময়ে তুলে নেন ২৭৭ রান। শ্রীলঙ্কার হয়ে মাত্র ৩৭ রানের বিনিময়ে তিনটি উইকেট তুলে নেন হাসারাঙ্গা।
এরম রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে জয়লাভ করে যে ভারতের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। শুধু ম্যাচ নয়, সিরিজ ও জিতে নিয়েছে ভারত। ফলে এখন তৃতীয় ও শেষ একদিনের ম্যাচটিই কেবলমাত্র শ্রীলঙ্কার সম্মানরক্ষার মরন বাঁচন লড়াই।