একটা সময় ছিল যখন অলিম্পিকের ময়দানে দাপিয়ে বেরিয়েছিল ভারতীয় হকি দলের দামাল ছেলেরা। ভারতের অলিম্পিক ইতিহাসের মোট ৯টি সোনার মধ্যে ৮টিই হকির দৌলতে। যদিও সময় পাল্টেছে। ক্ষমতা ম্লান হয়েছে ইন্ডিয়ান হকি টিমের। তারই নমুনা আজ অস্ট্রেলিয়ার কাছে আজ মনপ্রীতের ছেলেদের মুখ থুবড়ে পড়া।
ভারতের এই ছন্নছাড়া ফর্ম এবারের শুরু থেকেই প্রকট। প্রথমে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৩-২ এ ‘কোনোমতে’ জয়। তারপর আজ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ‘অসহায় আত্মসমর্পণ’। আজ ভারতীয় দলের রক্ষন ছিল একেবারেই সাদামাটা। মোট ছটি পেনাল্টি কর্নার পায়, যার থেকে একটি গোল-ও করতে পারেনি আজ ভারতের পুরুষ হকি দল। অপরদিকে অস্ট্রেলিয়া পেনাল্টি সুযোগের সৎব্যবহার করে দুরমুশ করে ভারতকে। যদিও এর পিছনে অন্যতম কারন হল, ভারতের গোলকিপার শ্রীজেশ-এর ছন্দে না থাকা। তিনি ও ভারতের অন্যতম অভিজ্ঞ খেলোয়াড় হরমনপ্রীত সিং আজ একেবারেই ফর্মে ছিলেন না। যার খেসারত আজকের এই লজ্জাজনক পরাজয়।
যদিও আজকের ম্যাচের প্রথম কোয়ার্টারে খানিকটা জ্বলে ওঠার ভঙ্গী দেখা যায় ভারতীয় খেলোয়াড়দের মধ্যে। একটি পেনাল্টি কর্নার-ও পায় ম্যাচের ৮ মিনিটে। কিন্তু বিশেষ কিছু সুবিধা আদায় করতে পারেনি সেই কর্নার থেকে। প্রথম কোয়ার্টারে অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম সাফল্য এনে দেন জেমস ব্যালে। ১০ মিনিটের মাথায় গোল করে তিনি ১-০ র লিড দেন অস্ট্রেলিয়াকে।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় কোয়ার্টারে ভারত অস্ট্রেলিয়ার সামনে বিশেষ জ্বলে ওঠার সুযোগ পায়নি। অস্ট্রেলিয়ার আক্রমনের সামনে ভারতের রক্ষন বারবার দিশেহারা হতে দেখা যায় আজ। ম্যাচের ২১ মিনিটে গোল করেন অস্ট্রেলিয়ার জেরেমি টমাস। ২৩ মিনিটে গোল করেন অ্যান্ড্রু অজিলভিয়ে। এরপর ২৬ মিনিটে ব্যবধান ৪-০ করেন জশুয়া ব্লেটজে। তৃতীয় কোয়ার্টারে বেশ কয়েকটি পেনাল্টি পেয়েও সুযোগ হারাতে থাকেন ভারতীয় খেলোয়াড়েরা। এদিকে পেনাল্টি থেকেই পঞ্চম গোল করেন ব্লেক গোভার্স। ষষ্ঠ গোলও পেনাল্টি থেকেই পায় অজিরা। চতুর্থ কোয়ার্টারের ৫১ মিনিটে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সপ্তম ও শেষ গোলটি করেন টিম ব্র্যান্ড। ভারতের হয়ে সবেধন গোলটি করেন ম্যাচের ৩৫ মিনিটে দলপ্রীত সিং।
এরপর ভারতের তৃতীয় ম্যাচ ২৭ তারিখ। বিপক্ষ টিম স্পেন। তাই এই হারের যন্ত্রণা ও গ্লানি ভুলে যত তাড়াতাড়ি ভারতীয় হকি দল মাঠে নামতে পারবে, ততই তাদের মঙ্গল।