ফেরিওয়ালার ছদ্মবেশে রাজধানীতে বসেই সারা রাজ্যে এবং সারা দেশে এক ধরনের জেহাদি সংগঠন তৈরি করার জাল বিছিয়েছিল নাজিউর রহমান এবং তার সঙ্গীদের। কলকাতায় বসে রাজ্যে জিহাদি সংগঠন তৈরি করা শুধু নয়, জঙ্গী সংগঠন জেএমবি-র সদস্য বৃদ্ধি করা, তহবিল বৃদ্ধি করা এবং মজবুত নেটওয়ার্ক তৈরি করার পরিকল্পনা ও নেওয়া হয়েছিল। গোটা দেশে নাশকতা ঘটানোর ছক কষেছিল নাজিউর রহমান এবং তার সঙ্গীরা।
তবে গত বছর জুলাই মাসে তাদের সমস্ত পরিকল্পনা ভেস্তে দেয় কলকাতা পুলিশ। ধৃত পাঁচজন জেএমবি জঙ্গিকে তারপরে হস্তান্তরিত করা হয় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এএনআই-র অধীনে। অবশেষে তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করল এনআইএ। তাদের বিরুদ্ধে পেশ করা এই চার্জশিটে বাংলাদেশের জঙ্গী সংগঠন জেএমবি মাথা নাজিউর রহমান, মিকাইল খান, আব্দুল মান্নান এবং রাহুল কুমার এর নাম রয়েছে। প্রত্যেকেই বাংলাদেশের বাসিন্দা বলে উল্লেখ করা হয়েছে চার্জশিটে। তার পাশাপাশি বাংলাদেশের দাগি আসামি হিসেবেও তাদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সীমানা পেরিয়ে এ দেশে আসা এবং তাদের জেল ভেঙ্গে পালানোর কথা বিশেষভাবে উল্লেখিত রয়েছে এই চার্জশিটে।
এছাড়াও ধৃতদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ বা রাষ্ট্রদ্রোহীতার ধারাই মামলা দায়ের করেছে এনআইএ। তার সাথেই আইপিসির ৬টি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এনআইএ আইনজীবী শ্যামল ঘোষ জানিয়েছেন, কলকাতার হরিদেবপুর এলাকা থেকে গত বছর জুলাই মাসে সন্দেহজনকভাবে নাজিউর রহমান, ওরফে পাভেল, মেকাইল খান ওরফে শেখ সাব্বির, রবিউল ইসলামকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ ডিপার্টমেন্ট। তার পরে সেখান থেকে বহু ভুয়ো কাগজপত্র, জেহাদী বই এবং লিফলেট উদ্ধার করা হয়। এখান থেকেই প্রমাণ হয়, তারা জঙ্গী সংগঠনের কাজ করার জন্যই বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছিল।
এছাড়াও সেখান থেকে একটি ডায়রি উদ্ধার করা হয়, এখানে বাংলাদেশের বেশকিছু মোবাইল নম্বর রয়েছে। একটি লিফলেট উদ্ধার হয় যেখানে ভারতের বিরুদ্ধে জেহাদী আন্দোলনের ডাক দিয়ে বোমা তৈরীর আহবান জানিয়েছে ধৃতরা। প্রথমে তিনজন সদস্য গ্রেপ্তার হলে, পরবর্তীতে এ মামলার দায়ভার গ্রহণ করে এনআইএ। তারপর এই তদন্ত শুরু করে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সুভাষগ্রাম থেকে এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাত থেকে দুই বাংলাদেশী নাগরিককে গ্রেফতার করে এনআইএ।