ভাঁড়ার শূন্য! আর্থিক সংকট থেকে রেহাই পেতে এক অভিনব উদ্যোগ নিল কলকাতা পুরসভা (Kolkata Municipality Corporation)। এবার থেকে পুরসভার কর্মী এবং অফিসারদের 'ওভারটাইম-ইনসেনটিভ' বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরসভা। এখানেই শেষ নয়, যেসকল কর্মী কিংবা পুরসভার অফিসার 'অভিজ্ঞতার অপরিহার্যতা' দেখিয়ে অবসরের পরেও মোটা মাইনের বেতন নিচ্ছেন, তাঁদের যত শীঘ্র সম্ভব পাকাপাকি 'ছুটি'-র ব্যবস্থা করতে চলেছে পুরসভা, এমনটাই খবর। সোমবার পুর প্রশাসক এবং রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) এমন কথা জানিয়েছেন।
বর্তমানে কলকাতা পুরসভার অধীনে প্রায় ২০ হাজার স্থায়ী কর্মী এবং প্রায় ১৬ হাজার চুক্তিভিত্তিক কর্মী কাজ করেন। কোভিড পরিস্থিতিতে দেখা গেছে অনেক কম সংখ্যক কর্মী দিয়েও সমস্ত দফতরের কাজ সম্পন্ন করা গেছে। এই সময় আরও দেখা গেছে, বিভিন্ন বিভাগে অতিরিক্ত কর্মী কাজ করছে, আবার বেশ কিছু বিভাগে কর্মীর সংখ্যা হাতে গোনা। এখানেই শেষ নয়, বেশ কিছু বিভাগের কর্মী অবসরের পরেও অভিজ্ঞতার অপরিহার্যতার অজুহাতে এখনও 'সামান্য' কাজের বিনিময়ে মোটা অঙ্কের মাইনে নিচ্ছেন। ইতিমধ্যেই 'প্রাইস ওয়াটার'-এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাকে দিয়ে বিষয়টির পূর্ণাঙ্গ তদন্তের কথা বলা হয়েছে। যাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে আগামীর রূপরেখা তৈরি হবে বলে খবর।
বর্তমানে বড়সড় আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছে কলকাতা পুরসভা। গত দিন কয়েক আগেই ১৬১ কোটি টাকার ঘাটতি বাজেট পেশ করা হয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন ঠিকাদারি সংস্থার প্রাপ্য পাওনা মেটাতে পারছে না পুরসভা। বিষয়টির খোঁজখবর নিতে গিয়ে দেখা গেছে, বেশ কিছু দফতরে এখনও অসংখ্য কর্মী অবসরের পরেও কাজে বহাল আছেন। শুধু তাই নয়, তাঁরা মোটা অঙ্কের মাইনেও নিচ্ছেন। এরফলে পুরসভার আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি নতুন ছেলেমেয়েরা কাজের সুযোগ হারাচ্ছে। বিভিন্ন বিভাগ এবং দফতরে ওভারটাইম-ইনসেনটিভ চালু রয়েছে। যার জন্য পুরসভাকে বাড়তি খরচ বহন করতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বিষয়টি নিয়ে আগেও প্রশ্ন তুলেছিলেন ফিরহাদ হাকিম। বছর তিনেক আগে কলকাতা পুরসভার মেয়র হয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, কাজের জন্য বেতন দেওয়ার পরও কেন অতিরিক্ত টাকা 'ওভারটাইম-ইনসেনটিভ' হিসেবে দেওয়া হবে? যদিও বিষয়টি নিয়ে তারপর আর কোন উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি বলে খবর। তবে এবার পুরসভার উদ্যোগে বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট তৎপরতা দেখা গেছে। পুরসভার খোলনলচে বদলে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পরিষেবা অনলাইন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এবার পুরসভার আর্থিক সংকট কমাতে এমন অভিনব উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানা গেছে।