বর্তমান প্রজন্মের কাছে (Cafe) "ক্যাফে" যতই আসুক না কেন, আজও কলেজপাড়ার 'কফি হাউস' (Indian Coffee House, College Street) বাঙালির কাছে এক এবং অদ্বিতীয়। তা সে যতই বেড়ে যাক দাম কিংবা খারাপ হোক খাবারের গুণগত মান, 'কফি হাউস' (Coffee House, Kolkata) বসে আছে বাঙালির মনে। চল্লিশের দশকে কলেজ স্ট্রিটে (15, Bankim Chatterjee Street, Kolkata) 'কফি হাউস' শুরু করে ভারতীয় কফি বোর্ড। আজকের এই কফি হাউস এক সময় 'অ্যালবার্ট হল' (Albert Hall) নামেও বেশ পরিচিত ছিল।
সাহিত্যিক গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য, সমরেশ বসু, দীপেন বন্দ্যোপাধ্যায়, গৌরকিশোর ঘোষ, মণিশঙ্কর, বিমল মিত্র, ভবানী মুখোপাধ্যায়, তারাপদ রায়, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, শক্তি চট্টোপাধ্যায় এবং সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় থেকে শিবরাম চক্রবর্তী, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, বিনয় মজুমদার, তরুণ স্যান্যাল, অমিতাভ দাশগুপ্ত কিংবা নাটক এবং ছবির জগতের দিকপাল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিজন ভট্টাচার্য, শম্ভু মিত্র, উৎপল দত্ত, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত এবং অপর্ণা সেন বা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, অনিল বিশ্বাস, অসীম দাশগুপ্ত, মানবেন্দ্রনাথ রায়, বিমান বসু - কে না আসতেন এই কফি হাউসে। ধূমায়িত কফির কাপের সঙ্গে চলত বই পড়া, আড্ডা, গল্প, প্রেম নিবেদন, যুক্তি-তর্ক আরও কত কী!
এক সময় কোর্টের রায়ে কফি হাউস বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। এই সময়ে তৎকালীন বাম সরকার সিদ্ধান্ত নেয় কফি হাউস কিনে নেওয়ার। ১৯৯৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর কফি হাউসের নির্দিষ্ট অংশ কিনে নেয় রাজ্য সরকার। তারপর সেটি তুলে দেওয়া হয় কফি হাউস সমবায়ের হাতে। এরপর থেকে এখনও পর্যন্ত সগৌরবে চলছে "Indian Coffee House"।
কলেজ স্ট্রিটের বুকে বহু ক্যাফে, রেস্তরাঁ খুললেও আজও বাঙালির মনে একই ভাবে অবস্থান করছে 'কফি হাউস'। বর্তমানে একাংশের অভিযোগ 'কফি হাউস'-এর খাবারের গুণগত মান এবং কর্মীদের ব্যবহার তলানিতে ঠেকেছে। তবে অধিকাংশই আবার আজও কফি হাউসের 'বেকড ফিশ', 'ফিশ ফিঙ্গার', 'এগ স্যান্ডউইচ', 'ইনফিউশন'-এই মজে।