অবশেষে একদশক পরে গ্রেফতার করা হল জুনিয়র মৃধা খুনিকে। যদিও তরুণ জুনিয়রের মৃত্যুর দিন থেকেই, তীর ছিল 'প্রেমিকা' প্রিয়াঙ্কা চৌধুরীর উপরে। কে এই জুনিয়র মৃধা? কেই বা প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী? কী করেই বা খুন হল জুনিয়র? এত বছর পরে অবশ্য এই প্রশ্ন গুলো মনে ডানা বাধা স্বাভাবিক ব্যাপার।
তবে এ প্রশ্নের উত্তরে খোলসা করে বলতে হয় প্রথম থেকেই। সময়টা ২০১১-এর ১১ জুলাই। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে থেকে উদ্ধার হয়েছিল জুনিয়রের মৃতদেহ। যিনি পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। প্রাথমিকভাবে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হলেও ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জুনিয়রের কাঁধে গুলির ক্ষতচিহ্ন পাওয়া যায়।
সেই সময় জুনিয়রের পরিবারের তরফে দাবি করা হয়, ১১জুলাই অর্থাৎ জুনিয়রের মৃত্যুর দিন দুপুরে প্রিয়াঙ্কা'র বাড়িতে যাবেন বলেই বাড়ি থেকে রওনা হয়েছিলেন ছেলে। কে এই প্রিয়াঙ্কা? প্রিয়াঙ্কা, যার সাথে জুনিয়রের ২০০৮ সাল থেকে প্রেম। এমনকি ২০১১'তে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল দুজনের। কাজেই, প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল প্রিয়াঙ্কার উপরেই।
এরপরে খুনের আট দিনের মাথায়, সিআইডির হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়া হয় জুনিয়রের রহস্যমৃত্যুর। জুনিয়রের বাবা-মা ভেবেছিলেন ছেলের খুনিকে হয়তো খুব শীঘ্রই পাওয়া যাবে। তবে সেই আশায় জল ঢেলে দেন, মোহনবাগানের প্রাক্তন কর্তা। নিজের প্রভাব খাটিয়ে সিবিআই'র চার তদন্তকারী আধিকারিককে বদলি করে দেন, অন্তত এমনটাই অভিযোগ ওঠে মোহনবাগানের প্রাক্তন কর্তার বিরুদ্ধে।
তবে এখানে মোহনবাগানের প্রাক্তন কর্তার ভূমিকা কী? ২০০৮ সাল থেকে জুনিয়রের সাথে প্রিয়াঙ্কার সোশ্যাল সাইটের মাধ্যমে প্রেম। ২০১১'তে জুনিয়রের খুন, আর প্রেমের আগে থেকেই যে প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী বিবাহিত তা নাকি বুঝতেই পারেননি জুনিয়র এবং তার পরিবার।
এ বিষয়ে জুনিয়রের পরিবার জানায়, জুনিয়রের খুনের তিন মাস আগের এক সন্ধ্যায় ‘পারিবারিক’ টিভি শো'তে প্রিয়াঙ্কাকে শাঁখা-সিঁদুর পরে শ্বশুরবাড়ির বিষয়ে বলতে দেখেন জুনিয়রের পরিবার। হতবাক হয়ে যান সকলে। বিষয়টি জানার পর ধাক্কা সামলে উঠে পারেননি জুনিয়রও। এরপর জানা যায়, মোহনবাগানের ওই প্রাক্তন কর্তার পুত্রবধু প্রিয়াঙ্কা ওরফে মুন। এরপর এভাবেই দশক পেরিয়ে অবশেষে গ্রেফতার করা হল সেই প্রিয়াঙ্কা চৌধুরীকে। সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর জুনিয়রের ‘প্রেমিকা’ প্রিয়াঙ্কাকে সোমবার গ্রেফতার করেছে সিবিআই।