মাত্র ৪১ বছর বয়সেই তাঁর যথেষ্ট নামডাক ছিল। অস্ত্রোপচারে তাঁর কৃতিত্বের কথা সর্বজনবিদিত। একজন অ্যানেস্থেশিষ্ট চিকিৎসক হিসেবে তিনি তাঁর স্বল্প আয়ুর জীবদ্দশায় মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। মৃত্যুর পরও নজির তৈরি করলেন। তাঁর অঙ্গদানে জীবন পেলেন তিনজন মানুষ। বেঁচে থাকাকালীন কত মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন, আবার মৃত্যুর পরও তাঁর অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পর তিনজন মানুষ নবজীবন লাভ করল।
ডাঃ সংযুক্তা শ্যাম রায় (Sanjukta Shyam Roy) একজন বিখ্যাত অ্যানেস্থেশিষ্ট। গত শনিবার তাঁর আচমকাই হার্ট অ্যাটাক হয়। মুহূর্তের মধ্যেই স্তব্ধ হয়ে যায় হৃদযন্ত্র। চিকিৎসকদের চেষ্টায় তা সচল হলেও রক্ত সরবরাহের অভাবে মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে শুরু করে। চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন তাঁর ব্রেন ডেথ হতে চলেছে। এমন একজন গুণী চিকিৎসকের মৃত্যুতে সবার চোখে জল, তখনই তাঁর স্বামী অঙ্গদানের ব্যাপারে সম্মতি জানান।
মোট তিনজনের শরীরে অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। সূত্রের খবর, তিনজনেই সুস্থ আছেন। চিকিৎসক সংযুক্তার লিভার প্রতিস্থাপন করা হয় ৬১ বছর বয়সী কলকাতার বাসিন্দাকে। তিনি বর্তমানে চিকিৎসকদের কড়া পর্যবেক্ষণে আছেন। অন্যদিকে, দু'টি কিডনির একটি চলে যায় এসএসকেএম হাসপাতালে, আর অপরটি দমদমের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। দু'টি কিডনিই প্রতিস্থাপিত হয়েছে। দু'জনেই ভালো আছেন বলে সূত্রের খবর। এছাড়া চিকিৎসক সংযুক্তা শ্যাম রায়ের কর্ণিয়া সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
একজন গুণী চিকিৎসকের মৃত্যু সমাজের কাছে বড় ক্ষতি। বেঁচে থাকাকালীন এই এনআরএস মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তনী বহু মানুষের জীবন বাঁচিয়েছেন। আর মৃত্যুর পরও তাঁর অঙ্গে প্রাণ পেল মানুষ। এমন শোকাতুর পরিবেশে চিকিৎসক সংযুক্তা শ্যাম রায়ের পরিবার যে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছেন, তাঁদের কুর্নিশ জানিয়েছেন একাংশ।