অনেকটা ফিল্মি কায়দায় সিবিআই (CBI) জালে ধরা পড়েন বীরভূমের 'বেতাজ বাদশা' অনুব্রত মন্ডল (Anubrata Mondal)। অনেক ফন্দি ফিকির করেও শেষরক্ষা হয়নি। পুরো আটঘাঁট মেনেই নেমেছিল সিবিআই। কোন ফাঁক রাখেই নি। পরিকল্পনামাফিক পদ্ধতি মেনেই অনুব্রত মন্ডলের ঘর থেকেই তুলে নেওয়া হয় তাঁকে। দিনভর অনেক টালবাহানার পর গভীর রাতে কলকাতার নিজাম প্যালেসে নিয়ে আসা হয় অনুব্রত মন্ডলকে।
চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ। সূত্রের খবর, আসানসোল আদালতে নাকি কেষ্টর চোখে জল দেখা গিয়েছিল। রুমাল দিয়ে তিনি নাকি চোখের জল মুছছিলেন বারবার। সাংবাদিকদের কোন প্রশ্নের উত্তর তিনি দেননি। বহুবার প্রশ্ন করা হলেও তিনি ছিলেন নিশ্চুপ। এমনকী আদালতে নিজের জামিনের পক্ষেও তিনি কোন সওয়াল করেননি। সূত্রের খবর, দশ দিনের সিবিআই হেফাজতে আজ থেকেই জেরা শুরু করতে চলেছে সিবিআইয়ের বিশেষ আধিকারিক দল, খবর তেমনটাই।
উল্লেখ্য, গতকাল দিনভর ছিল টানটান উত্তেজনা। বলিউড সিনেমার চিত্রনাট্যের মতোই বাংলার মানুষ নজর রাখছিলেন গোটা ঘটনার দিকে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পর তৃণমূল কংগ্রেসের আরও একজন হেভিওয়েট নেতা সিবিআইয়ের জালে। এ নিয়ে দলের অন্দরে তীব্র চাপানউতোর তৈরি হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসে জিরো টলারেন্সের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু সিবিআই, ইডি-র বিরুদ্ধে আজ থেকেই পথে নামছে শাসকদল। অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে লাগিয়ে দিচ্ছে বিজেপি, এমনই অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
অন্যদিকে, অনুব্রত মন্ডলের গ্রেফতারির পর তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে তৈরি হয়েছে তীব্র চাপানউতোর। তৃণমূল কংগ্রেসের আরও একজন হেভিওয়েট নেতা মদন মিত্র অনুব্রত মন্ডলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। দল অনুব্রত মন্ডলের পাশে আছে কী না তা-ও স্পষ্ট নয়। বিরোধী দলগুলি গতকাল থেকেই রাজ্যজুড়ে তেড়েফুঁড়ে আন্দোলনে নেমেছে। গুড়, বাতাসা, নকুলদানা বিলির পাশাপাশি চলছে ঢ্যাড়া পিছিয়ে অনুব্রতর গ্রেফতারির বিষয়ে স্লোগান। সব মিলিয়ে কেষ্টর গ্রেফতারির পর রাজ্য জুড়ে টানটান উত্তেজনা।