শহরের বুকে আবারও মর্মান্তিক অগ্নিকান্ড ! এবার কলকাতার স্ট্র্যান্ড রোডের পূর্ব রেলের কয়লাঘাট বিল্ডিঙে বিধ্বংসী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে প্রাণ হারালেন ন'জন। পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র জানান, মৃতদের মধ্যে রয়েছেন রেলের ডেপুটি চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজার পার্থসারথি মণ্ডল, দমকলের চার কর্মী, পুলিশের এক অফিসার এবং আরপিএফ-এর এক জন। গতরাত ১টা নাগাদ সবকটি দেহ এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়। শনাক্তকরণের জন্য দীর্ঘ সময় লাগে।
দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু সন্ধ্যা থেকে উপস্থিত ছিলেন এবং গভীর রাতে আগুন নেভা পর্যন্ত ঘটনাস্থলেই ছিলেন। আসেন ফিরহাদ হাকিম ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ সমস্যায় পড়তে হয় দমকল কর্মীদের। সন্ধ্যা ৬:১০ এসি ফেটে (প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী) আগুন লাগলেও নিয়ন্ত্রণে আসতে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগে। লিফটে করে উঠে তেরো তলায় পৌঁছে দরজা খুলতেই আগুনে ঝলসে যান ওই ন'জন। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে তেরো তলায় উঠে দমকলমন্ত্রীও দেখে আসেন লিফটের মধ্যেই পাঁচ জনের দেহ ও বাইরে আরও দুজনের ঝলসে যাওয়া দেহ পড়ে আছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে আসেন এবং মৃতদের প্রতি গভীর শোকজ্ঞাপন করে ঘোষণা করেন প্রত্যেক মৃতের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে। এই ব্যপক অগ্নিসংযোগ দেখেও দমকলকর্মীদের লিফট ব্যবহার করা কতটা যুক্তিযুক্ত ছিল, সেই নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন কারণ বিদ্যুৎ সংযোগ অক্ষত রেখে অগ্নির বলয়ে প্রবেশ করার অর্থ ঝুঁকির মাত্রা দ্বিগুণ করা। মুখ্যমন্ত্রী রেলের অসহযোগিতার প্রশ্ন তুলেও আবার বলেন, "দুর্ঘটনা নিয়ে আমি কোনও রাজনীতি করতে চাই না।" উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত জারি করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীও এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে সাহায্য ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা ও আহতরা পঞ্চাশ হাজার টাকা পাবেন।