'কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা, মনে মনে', রবি ঠাকুরের এই গানকে মনের মণিকোঠায় আপন করে নেননি, এমন মানুষ কম। কারণ মন আমাদের জীবনের এমন এক অঙ্গ, যাঁর শারীরিক ভাবে হয়ত কোনও উপস্থিতি নেই, কিন্তু এই বায়বীয় 'কনসেপ্ট' এর ভালো থাকা বা খারাপ থাকার প্রভাব পড়ে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে। তাই মনকে ভালো রাখতেই মেনে চলতে হবে আমাদের বেশ কিছু নিয়ম। ঘরোয়া উপায়েই কীভাবে মনের যত্ন নেবেন, তারই জানান দিল পরিদর্শক।
• পর্যাপ্ত ঘুম- সুস্বাস্থ্য এবং ভালো মনের জন্য ঘুম অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। রাতে নূন্যতম সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমোনো আবশ্যক। এই দীর্ঘ বিশ্রামের পর সকালে উঠলে শরীরও যেমন ক্লান্তিহীন থাকে, তার সঙ্গে মনও অনেক ফুরফুরে হয়ে ওঠে। ফলে মনকে ভালো রাখার প্রাথমিক ভূমিকা ঘুমই পালন করে থাকে।
• স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ - শারীরিক সুস্থতার জন্য, সুষম এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ভীষণ গুরুত্বপূর্ন। বাইরের বেশি তেল মশলা জাতীয় খাদ্য যথা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ এগুলি শরীরের ক্ষতি তো করেই, মনের ওপরও প্রভাব ফেলে। ঠিকমত প্রোটিন, পরিমাণ মত কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন গ্রহণ আবশ্যক। খাদ্য গ্রহণের সময়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। যাতে দীর্ঘ সময় পেট খালি না থাকে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ দীর্ঘ সময় ধরে না খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের মত সমস্যা দেখা যায়। যা মন তথা শরীরের পক্ষে একেবারেই ভালো না। তাই প্রতি চার ঘণ্টা অন্তর স্বল্প হলেও খাদ্যগ্রহণ করা উচিত।
• অবসর - সারাদিন একটানা কাজ করে যাওয়া, নিজের জন্য অবসর যাপনের সময়টুকু না দেওয়া, মানসিক ক্ষতি সাধিত করে। তাই শরীরের সঙ্গে মনেরও বিশ্রাম চাই। তার জন্য নিজের পছন্দ মত নিজেকেই বিনোদন প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
• সামাজিক সক্রিয়তা - সপ্তাহে এক দুদিন অন্তত প্রিয় মানুষদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া, বা একসঙ্গে সময় কাটানো মনকে ভালো রাখার অন্যতম ওষুধ। দিনের শেষে হলেও বন্ধুদের সঙ্গে ঘণ্টা কয়েক কথোপকথন আপনার মনকে প্রশান্তি দেবে। তাই মনের যত্ন নেওয়ার জন্য, নিজের মত করে সামাজিক সক্রিয়তারও দরকার পড়ে বৈকি!
• ব্যায়াম - শরীর এবং মনকে ভালো রাখতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ন মহৌষধ হল শরীর চর্চা। সকালে উঠে যোগাসন বা প্রাণায়াম আপনার শরীরকে আগামী কাজের জন্য উপযুক্ত করে তুলবে। শরীর সুস্থ থাকলে, মনও সুস্থ থাকবে। এছাড়া প্রতিদিন অন্তত কুড়ি থেকে পঁচিশ মিনিট হাঁটাও আপনার শরীর এবং মনের স্বাথ্যের জন্য উপকারী।
সতর্কতা - এই ঘরোয়া উপায়গুলি ছাড়াও নিজেকে সুস্থ রাখার অনেক উপায় হয়। এই উপায়গুলিও একমাত্র উপায় নয়। তাই আপনার স্বাস্থ্য বুঝে, অবশ্যই চিকিৎসকের থেকে পরামর্শ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্বাচন করবেন ।