"কেন মানুষ থিয়েটারের সৃজকদের কাছে যাবে জানো? থিয়েটারের লোকেরা আসলে সমাজের সিসমোগ্রাফ। তারা ক্রান্তদর্শী। অনেক আগে ওঁরা সামাজিক বদলগুলো টের পান। তাই থিয়েটারের মানুষদের অনেক বেশি বোধ ও অনুভূতিসম্পন্ন হতে হয়", বলছিলেন তিনি। বাংলা নবনাট্য আন্দোলন এবং শম্ভু মিত্র থেকে অনেক নাম ও ধারা বয়ে আজ কোথায় এলো আমাদের বহুজনবন্দিত, গুনীজননন্দিত বাংলা থিয়েটার সেই বিষয়েই কথা হচ্ছিল। নিজের নানা অভিজ্ঞতা টুকরো টুকরো নানা ছবির মাধ্যমে তুলে ধরছিলেন অবলীলায়। আমাদের থিয়েটারের উদ্বর্তন ও উত্পীড়ন, দুইই এল আলোচনায়। চারপাশে ঘটে চলা থিয়েটারের কাজের ব্যাকুলতার মাঝে ইতিউতি যে একটা অশ্রদ্ধার বাতাবরণও পুষ্টি পাচ্ছে আর সেটা পীড়িত করছে নতুন নাটুয়াদের মন ও মনন, সে কথা শুনলেন মন দিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে।
কথায় কথায় এলেন ক্যারেল চ্যাপেক, ব্রেখ্ট, এলেন শেকসপিয়র এবং অনিবার্য সেই রবীন্দ্রনাথ। "থিয়েটার তো একা একা হতেই পারে না। অথচ প্রতিটি একা মানুষের মধ্যে একটা ভারসাম্য বজায় রাখা চাই। সেই চর্চাটা আবার একা একাই হয়। এইটিই ডাইকোটমি থিয়েটারে। এখানে তুমি একা কেউ নও আবার তোমায় একা একাই চর্যাটা রাখতে হয়। এটা করতে গিয়েই গোলমাল হয় বোঝাবুঝিতে", সমকালীন ভাবনা ও তার মধ্যেকার লুজ হোলগুলি বুঝতে চাইলেন নতুনদের থেকে। বললেন, "আসলে থিয়েটারে যখন কেউ আসে সে তো সত্যের মুখোমুখি হতে আসে। আর সেই সত্যপ্রকাশ, সেই অভিনয় তো গোটা শরীর মনে ঘটে। তাই কোথাও যেমন ডুবে থাকতে হয় সময়ের গতিপ্রকৃতি বুঝতে তেমনই আবার একটু সুখেষু নিরুদ্বিগ্নমনহ দুঃখেষু বীতরাগস্পৃহও হতে হবে। ওটাই ব্যালেন্স। থিয়েটারে সেই ব্যালেন্সের খেলা সর্বত্র।" তিনি রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত। প্রজ্ঞা এখনও যাঁর মধ্যে জাগ্রত।