ফেলুদা সব্যসাচী চক্রবর্তীর নতুন মন্তব্যের পর আবারও নতুন করে আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন ফেলুদা ভক্তরা। একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের সময় ফেলুদা সব্যসাচী চক্রবর্তী বললেন, কলকাতায় একটা সত্যজিৎ রায় মিউজিয়াম হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। এছাড়াও, এই মিউজিয়াম হলে তিনি যে নিজে এগিয়ে আসবেন, সে ব্যাপারেও জানালেন সব্যসাচী চক্রবর্তী। বাংলা সাহিত্যের খাতিরে এবং বাঙালি সংস্কৃতির খাতিরে কলকাতার বুকে একটি ফেলুদা তথা সত্যজিৎ রায়ের সংগ্রহশালা হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন বলে আগ্রহ প্রকাশ করলেন সব্যসাচী চক্রবর্তী।
সব্যসাচী বললেন, 'শুধু ফেলুদা মিউজিয়াম বললে ভুল হবে, বরং সত্যজিৎ রায় সম্পর্কিত একটি মিউজিয়াম যদি তৈরি করা যায় তাহলে আরো মস্ত বড় কাজ হবে। অস্কারপ্রাপ্ত পরিচালকের ব্যবহৃত নানা জিনিসপত্র, চিত্রনাট্য, হাতে আঁকা পোস্টার, চিঠি এবং সিনেমায় ব্যবহৃত হরেক রকমের জিনিসপত্র দিয়ে যদি একটি দারুন মিউজিয়াম তৈরি করা যায়, তাহলে বাংলা সাহিত্যের জন্য এবং সাহিত্য প্রেমীদের জন্য জায়গাটা আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়াবে।' এছাড়াও, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার সংগ্রহের পরিমাণ আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন সব্যসাচী চক্রবর্তী।
সব্যসাচী চক্রবর্তী আরো বললেন, ' ওই মিউজিয়ামের মধ্যে যদি একটা বেশ বড় অংশ জুড়ে ফেলুদার একটা আলাদা মিউজিয়াম করা যায় তাহলে কিন্তু ষোল কলা পূর্ণ। যতই হোক না কেন, ফেলুদা ছাড়া সত্যজিৎ রায় কার্যত অসম্পূর্ণ। বাংলা সাহিত্য থেকে শুরু করে বাঙালির মনে ফেলুদা একটা আলাদা জায়গা দখল করে রেখেছেন বেশ কয়েক প্রজন্ম ধরে। বাঙালি পাঠক এবং দর্শকের কাছে ফেলুদা সব সময় একটা আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্টি করা সমস্ত চরিত্রগুলোকে নিয়েই যদি একটা আলাদা আলাদা জায়গা তৈরি করা যায় তাহলে সেটা বাঙালি দর্শকদের ক্ষেত্রে আরো আকর্ষণীয় হবে।'
সব্যসাচী চক্রবর্তী আরো বলছেন, তিনি যখন ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন তখন তিনি শার্লক হোমসের একটি মিউজিয়াম দেখেছিলেন। তাই সেই আদলে যদি একটি ফেলুদা মিউজিয়াম কিংবা সত্যজিৎ রায় মিউজিয়াম তৈরি করা যায় তাহলে আমরাও বাংলা সাহিত্যের একজন অন্যতম স্রষ্টাকে তথা বাঙালির কাছের একজন গোয়েন্দা চরিত্রকে সঠিক সম্মান জানাতে পারবো। ওরা যদি একটা কাল্পনিক গোয়েন্দা চরিত্রকে নিয়ে একটা আস্ত মিউজিয়াম তৈরি করে ফেলতে পারে, তাহলে আমরা কেন পারব না? ওরা যদি বেকার স্ট্রিটে শার্লক হোমসের মিউজিয়াম তৈরি করতে পারে, তাহলে আমরাও ২১, রজনী সেন রোডে ফেলুদার মিউজিয়াম তৈরি করতে পারব।
যদিও এই মিউজিয়াম তৈরি করা নিয়ে এখনো পর্যন্ত রাজ্য সরকারের সঙ্গে তেমন কিছু মনে হয়নি সত্যজিৎ পুত্র সন্দীপ রায় এবং সব্যসাচী চক্রবর্তীর। তবে, সব্যসাচী বলছেন, যদি রাজ্য সরকার এই বিষয় নিয়ে আগ্রহ দেখায়, তাহলে তিনিও এই মিউজিয়াম তৈরি করতে এগিয়ে আসবেন। এই মিউজিয়াম তৈরি করার জন্য বিপুল খরচ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও নানা রকম জটিল ব্যাপার স্যাপার রয়েছে, যা মাত্র কয়েক জন মানুষকে নিয়ে সামলানো অত্যন্ত কঠিন। তাই, ফেলুদা সব্যসাচী এখন রাজ্য সরকারের আগ্রহের অপেক্ষায় রয়েছেন।