এককালে নারীদের অবস্থান ছিল কেবল অন্দরমহলটুকু। চৌকাঠের বাইরে পা রাখা ছিল তাঁদের কাছে মহা পাপসম। অনেকদিন ধরেই নারী জাতির প্রতি অন্যায়ের বিরুদ্ধে অনেকেই সরব এবং সোচ্চার হয়েছেন। চিত্রটি এই যুগে দাঁড়িয়েও এদিক ওদিক হয়নি। এখনও আধুনিকতার মোড়কে ঘটে চলে নারী নিগ্রহ। রাজ্য মহিলা কমিশনের (West Bengal Commission for Women) চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের (Leena Gangopadhyay) উদ্যোগে সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা ইন্ড্রাস্ট্রির এক প্রধান ভিত। তাই তার অনুষ্ঠানে ছিল তারকা সমাহারও। গায়িকা ইমন চক্রবর্তী (Iman Chakraborty) নিজের জীবনের বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাতের টুকরো তুলে ধরলেন এই অনুষ্ঠানের মঞ্চে।
সামাজিক মাধ্যমে (Social Media) জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত গায়িকা অনুষ্ঠানের কিছু বিশেষ মুহুর্ত অনুগামীদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন। শিল্পীদের সংগ্রামের প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, লক্ষ্যে পৌঁছনোর পরেও শিল্পীদের আকাঙ্খা থাকে তার চেয়েও কঠিন লক্ষ্যে পৌঁছনো। কিন্তু কোনও মতেই সেটা 'সংগ্রাম' নয়। বরং সেটি অধ্যবসায় বা একটি সুন্দর স্বপ্ন, যাকে বাস্তবে সফল করে তুলতেই হবে। এই প্রসঙ্গেই তিনি আরও গভীরে গিয়ে বলেন, এখনও এই সমাজ শিল্পীদের লিঙ্গ-বিশেষে ভেদাভেদ করেন। এখনও তিনি মহিলা বলে, রাত করে বাড়ি ফিরলে তাঁর পারিপার্শ্বিকতা তাঁকে আঙ্গুল দেখায়। এখনও তাঁর শৈল্পিক গুণকে গৌণ রেখে, তাঁর পোশাক পরিচ্ছদ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।
ইমনের বক্তব্য, যতদিন পর্যন্ত একজন নারীকে সমাজ, শুধু একজন মানুষ হিসেবে না দেখবেন ততদিন এই সমাজ কোনওমতেই পরিণত হবে না। শিল্পী নয়, বরং একজন নারী হওয়ার দরুন তাঁকে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। গায়িকা তাঁর বক্তব্য শেষ করেন, মানুষকে আলোর পথে গমন করার বার্তা দিয়ে। তাই সেই মুহুর্তে তিনি তাঁর অন্যতম প্রিয় রবীন্দ্রসঙ্গীত হিসেবে 'আলোকের এই ঝর্ণাধারায়' গানটিকে নির্বাচন করেন।