পুত্র আরিয়ান খানের ড্রাগ মামলার সঙ্গে জড়িত থাকার ঘটনায় এবারে বিজ্ঞাপন থেকে শাহরুখ খানকে সরিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিল অনলাইনে শিক্ষাদানকারী একটি নামী সংস্থা। আরিয়ান কাণ্ডের জেরে শাহরুখ খানকে বিজ্ঞাপন থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি ক্রমাগত জোরালো হচ্ছিল। তাই শেষমেষ ওই পথে হেঁটে শাহরুখ খানকে দিয়ে করানো সমস্ত বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেবার সিদ্ধান্ত নিল ওই নামি সংস্থাটি। ছেলে আরিয়ান খান মাদককান্ডে জড়িয়ে পড়ার পর থেকে শাহরুখের সঙ্গে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল অনলাইনে শিক্ষাদানকারী ওই সংস্থাকে। ঘটনাচক্রে, এই সংস্থাটি আবার শিশুদের শিক্ষাদান করে। এই কারণেই প্রশ্ন উঠতে থাকে, শিশুদের ওপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে সেই নিয়ে।
নেট মাধ্যমে এই বিজ্ঞাপন নিয়ে শাহরুখকে জড়িয়ে একাধিক বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়। অনেকে শাহরুখ খান কে বলেন, নিজের ছেলে উচ্ছন্নে যখন যাচ্ছে, তখন তার মুখে শিশুদের শিক্ষা নিয়ে পরামর্শ দেওয়া মানায় না। অবিলম্বে এই অভিনেতাকে বিজ্ঞাপন থেকে সরানোর দাবি ওঠে। সংস্থার উপর চাপ বৃদ্ধি করতে থাকেন সাধারন মানুষ। ফলে শেষমেষ শাহরুখের বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এই অনলাইনে শিক্ষাদানকারী সংস্থাটি। যদিও ঘটনাচক্রে, এই সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হলেন শাহরুখ খান। তবে বর্তমানে বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দিলে তাকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর রাখা হয়েছে কিনা সেই নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। ২০১৭ থেকে অনলাইনে শিক্ষাদানকারী ওই সংস্থার সাথে বিজ্ঞাপনী চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিলেন কিং খান। তারপরে উল্লেখযোগ্যভাবে আয় বৃদ্ধি হয়েছে ওই সংস্থার। এই বিজ্ঞাপনের জন্য মোটা টাকার চুক্তি হয়েছিল শাহরুখ খানের। তবে এই সংস্থাটি ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে অবস্থান করছেন শাহরুখ খান। তবে এখন এটাই দেখার, এই শিক্ষাদানকারী প্ল্যাটফর্মের পথে হেঁটে কি অন্যান্য সংস্থাগুলি শাহরুখ খানকে তাদের বিজ্ঞাপন থেকে সরিয়ে দেয় নাকি না।
যদিও অন্যদিকে, আরিয়ান খান এর মামলা নিয়ে রীতিমতো সরগরম হয়ে উঠেছে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি। মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী তথা শিবসেনার নেতা নবাব মালিক শনিবার অভিযোগ জানিয়েছেন নারকটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো ওরফে এনসিবির সঙ্গে নাকি ভারতীয় জনতা পার্টির কিছু একটা যোগসাজশ রয়েছে। প্রথমে এনসিবি তরফ থেকে জানানো হয়েছিল, এই মামলায় সর্বমোট গ্রেফতার করা হয়েছে ১১ জনকে। যদিও পরে এনসিবি তরফ থেকে জানানো হয়, তিনজনকে নাকি ছেড়ে দিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোল সংস্থাটি। ঘটনাচক্রে এই তিনজনের মধ্যে একজন হলেন রিশভ সচদেব, যিনি কিনা বিজেপি নেতা মোহিত কামভোজের শ্যালক। মহারাষ্ট্রের ওই মন্ত্রী অভিযোগ তুলেছেন, এনসিবি নাকি ভারতীয় জনতা পার্টির সঙ্গে যুক্ত হয়ে তাদের নির্দেশে রিশভকে মুক্তি দিয়েছে। কাম্ভোজ এর আগে বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন এবং মহারাষ্ট্র বিজেপির অন্যতম বড় মুখ হিসেবে তিনি পরিচিত।
নবাব মালিক অভিযোগ তুলেছেন, শুধুমাত্র ঋষভ একা নন বরং তার সঙ্গেও প্রতীক গাবা এবং আমির ফার্নিচারওয়ালাকেও মুক্তি দিয়েছে এনসিবি। অন্যদিকে, আরিয়ান খান এর সঙ্গে জড়িত এই জাহাজ মামলায় চলচ্চিত্র প্রযোজক ইমতিয়াজ খাত্রীর বাড়ি খানাতল্লাশি করেছে এনসিবি কর্তৃপক্ষ। এনসিবির একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, আরিয়ান খান এর গ্রেফতার হওয়ার পরে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় ইমতিয়াজের নাম উঠে আসে। এই কারণেই তার বাড়ি তল্লাশি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনসিবি। অপরদিকে, মুম্বাইয়ের আদালত এনসিবির আর্জি সম্পূর্ণরূপে খারিজ করে দিয়েছে। বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের পুত্র আরিয়ান খানকে এনসিবি হেফাজতে স্থানান্তরিত করার জন্য আদালতে আর্জি জানিয়েছিলেন এনসিবির আইনজীবীরা। যদিও, মুম্বাইয়ের আদালত তাদের দাবি সম্পূর্ণরূপে খারিজ করে দিয়ে আরিয়ানকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর রায় জানিয়েছে।