কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ (Krishnakumar Kunnath) ওরফে কেকে (KK), যিনি হিন্দি থেকে তামিল, বাংলা থেকে গুজরাটি সহ একাধিক ভাষায় গান গেয়েছেন। জিতেছেন একাধিক অ্যাওয়ার্ড। গতকাল রাত দশটা নাগাদ প্রয়াত হয়েছেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। গায়কের এমন আকস্মিক মৃত্যুতে কলকাতা থেকে মুম্বইবাসী, সকলেই হতভম্ব। সোনু নিগম থেকে কুমার শানু, শান, শান্তনু মৈত্র, ২২ বছরের বন্ধু জিৎ গাঙ্গুলী সহ টলিউড থেকে বলিউড সকলেই কার্যত হতচকিয়ে গিয়েছেন কেকের মৃত্যুতে।
গায়কের জন্ম ২৩ অগস্ট ১৯৬৮ সালে। দশটিরও বেশি ভাষায় সুপারহিট গান গেয়েছেন কেকে। যদিও তাঁর শুরুর জার্নিটা ছিল আলাদাই। নয়া দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন কেকে। ছেলেবেলায় দিল্লির মাউন্ট মেরি স্কুলে পড়াশোনা শেষ করে, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ একটি কলেজে কমার্স নিয়ে পড়াশোনা শেষ করেন কেকে।
এরপর ছয় মাস মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ হিসেবে দিল্লিতে কাজ করেন তিনি। তবে কাজে সেভাবে মন না বসায়, ১৯৯৪ সালে মুম্বই চলে আসেন তিনি। শুরু হয় গান নিয়ে চর্চা। এর মাঝে আবার ১৯৯১ সালে নিজের পছন্দের পাত্রীকে বিয়ে করেন গায়ক।
বিভিন্ন চ্যানেলে সম্প্রচারিত হওয়া অ্যাডে সুর দিতে শুরু করেন কেকে। পরবর্তীতে এ.আর রহমানের সঙ্গে প্রথম প্লেব্যাক তাঁর।
এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি কৃষ্ণকুমার কুন্নাথকে। দেবদাসের 'দোলা রে দোলা', থেকে ওম শান্তি ওমের 'আখোঁ মে তেরি', স্কুল-কলেজের ফেয়ারওয়েলের সর্বাধিক জনপ্রিয় 'পল', 'ইয়ারো দোস্তি' থেকে সলমান খান অভিনীত বজরঙ্গি ভাইজানের 'তু জো মিলা', শ্রদ্ধা কাপুর অভিনীত আশিকী টু থেকে 'পিয়া আয়ে না', শাহরুখ-কাজল অভিনীত হ্যাপি নিউ ইয়ার থেকে 'ইন্ডিয়া ওয়ালে', জনপ্রিয় গান 'ওহ লামহে', 'খুদা জানে', 'মাত আজমা রে' সহ একাধিক হিট গান অনুগামীদের উপহার দিয়েছেন কেকে।
ছয়টি ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস পেয়েছেন তিনি শুধুমাত্র বলিউড থেকে। এছাড়াও বেস্ট মেল প্লেব্যাক গায়ক হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন তিনি। ছ'টি আইফা অ্যাওয়ার্ড, দু'টি জি সিনে অ্যাওয়ার্ডস, বেস্ট প্লেব্যাক সিঙ্গার (তামিল) ২০০৫ ছাড়াও সাউথে কন্নড় ভাষায় গান গাওয়ার জন্যেও বহু পুরস্কার পেয়েছেন কেকে।
বর্তমানে কেকের এক মেয়ে এবং এক ছেলে রয়েছে। বাবার আকস্মিক মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই হতভম্ব তাঁরা। ইতিমধ্যেই কলকাতায় এসে পৌঁছেছে কেকের স্ত্রী এবং পুত্র।