তিনি তাঁর নিজের নামের চেয়েও বেশি পরিচিত ছিলেন, 'আপ্পু' হিসেবে। ২০০২ সালে যে ছবির নামভূমিকায় তাঁর আত্মপ্রকাশ ঘটে রুপোলি জগতে, সেই চরিত্রেই মন জয় করে নেন আপামর ভারতবাসীর। পুনিত রাজকুমার (Puneeth Rajkumar), তাঁকে এক কথায় বলা যায় 'ম্যান ইন গোল্ডেন হার্ট'! অভিনেতা তো বটেই, মানুষ হিসেবেও তিনি সকলের মনের অন্তরঙ্গ হয়ে ওঠেন। সম্প্রতি কর্ণাটক সরকার ঘোষণা করেছেন, আগামী নভেম্বরে পুনিতকে মরণোত্তর 'কর্ণাটক রত্ন' (Karnataka Ratna) সম্মানে ভূষিত করা হবে। এই সম্মানটি সর্বোচ্চ অসামরিক নাগরিককে (Highest Civilian Honour) দেওয়া হয়, যাঁর দেশের প্রতি বিশেষ অবদান থেকে থাকে।
কন্নড় শিল্পী পুনিতের অভিনয় জগতে হাতে খড়ি হয় ১৯৭৬ সালে শিশু শিল্পী হিসেবে। ২০০২ সালে পরিণত বয়সে তিনি অভিনয় করেন 'আপ্পু' (Appu) ছবিতে। তারপর আর থেমে থাকেনি পুনিতের কেরিয়ারের গ্রাফ। আভি (Abhi) , আকাশ (Aakash), রাম (Raam), জ্যাকি (Jackie), পরমাত্মা (Paramathma) প্রভৃতি ছবিতে বিভিন্নরকম 'এক্সপেরিমেন্টাল' চরিত্রে অভিনয় করতে থাকেন তিনি। কখনও নিজেকে টাইপ কাস্ট করে রাখেননি। বহুমুখী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন অনুগামীদের মধ্যে। তিনি তাঁর নমনীয়, উদার স্বভাবের জন্য মানুষ হিসেবে সারা দেশবাসীর প্রিয় পাত্র হয়ে ওঠেন। কিন্তু, ভালো জিনিস যে জগতে বড়ই আপেক্ষিক! ২০২১ সালে ২৯ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে, মাত্র ৪৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন এই কন্নড় তারকা। রেখে যান তাঁর সুন্দর সাজানো গোছানো পরিবার, এবং মন ভালো করে দেওয়ার মতন কাজ।
পুনিত সশরীরে না থেকেও, থেকে গেছেন অসহায় মানুষের মধ্যে। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর চোখের আলোয় দৃষ্টি পেয়েছেন একাধিক মানুষ। জীবন মরণের সকল সীমানা অতিক্রম করে, 'মৃত্যুঞ্জয়' হয়ে উঠেছেন পুনিত। তিনি এমন একজন ব্যক্তিত্ব ছিলেন, যিনি নিজের অনুগামীদের তাঁর বাড়িতে আমন্ত্রণ জানতেন। তাই তো কন্নড় সরকার ঘোষণা করেছেন আগামী পয়লা নভেম্বরে তাঁকে সম্মানিত করার কথা। অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হবে বেঙ্গালুরুর লালবাগ গ্লাস হাউজে। বিভিন্নরকম ফুলের শ্রদ্ধাঞ্জলির সঙ্গে সংঘটিত হবে এই অনুষ্ঠান। থাকবেন পুনিতের পরিবারের সদস্যরাও। মৃত্যুর পরেও যেভাবে পুনিত মানুষের মধ্যে থেকে গেলেন, তা সত্যিই কুর্ণিশযোগ্য।