'জাত বড় না জাতি বড়?' এই প্রশ্নই বারবার উস্কে দিয়েছে মুন্নী, শবনম, জব্বর, রাঘবদের জীবন। ঝলসে উঠেছে তাঁদের পারিপার্শ্বিকতা। বারবার জয়ী হয়েছে ধর্মের নামে অসহিষ্ণুতা। রেহাই পাননি বয়োজ্যেষ্ঠা 'আম্মা'ও। ধর্মের আগুন তাঁর অস্তিত্বকেও ক্ষুন্ন করে দিয়েছে। আসলে এঁরা সকলেই রাজ চক্রবর্তীর (Raj Chakrabarty) বহু প্রতীক্ষিত ছবি, 'ধর্মযুদ্ধ' (Dharmajuddha) এর চরিত্র। রুপোলি পর্দার গল্প হলেও, এই গল্প আমাদের খুবই চেনা ভারতবর্ষের।
ছবির চরিত্রদের কেউই এক ধর্মের নন। ভিন্ন ধর্মের হয়েও এঁদের প্রতিনিয়ত অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে নিজেদের পিষে ফেলতে হয়। কেউই কারুর ধর্মে সুখী নেই। কোনও ধর্মই আক্ষরিক অর্থে নিরাপদ নয়! মানুষে মানুষে যেখানে সহিষ্ণুতা নেই, ধর্মের নামে বিদ্রোহ তো সেখানে মানুষ হত্যারই উপলক্ষ্য মাত্র। সমাজের ক্ষমতাশালী মানুষরা যে 'ধর্মযুদ্ধ' এর সূচনা করেন, তাতে আদতে প্রাণ যায় নিরীহ খেটে খাওয়া নিম্নস্তরের মানুষেরই। স্বজনহারা তথা সর্বহারার যন্ত্রণায় তাঁদের জীবন বিদ্ধ হয়ে ওঠে। কিন্তু এর কি কোনও সুরাহা নেই? এর কি কোনও শেষ নেই? এই সকল প্রশ্নকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে 'ধর্মযুদ্ধ' ছবির প্রেক্ষাপট।
ছবিটিতে অভিনয় করেছেন শুভশ্রী গাঙ্গুলী (Subhashree Ganguly), পার্ণো মিত্র (Parno Mitra) , সোহম চক্রবর্তী (Soham Chakraborty), ঋত্বিক চক্রবর্তী (Ritwick Chakraborty), সপ্তর্ষি মৌলিক (Saptarshi Maulik), কৌশিক রায় (Koushik Roy) প্রমুখ। তাঁরাই যথাক্রমে মুন্নী, শবনম, জব্বর এবং রাঘবের চরিত্রে অভিনয় করছেন। 'আম্মা' র চরিত্রে আছেন প্রয়াত অভিনেত্রী স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত (Swatilekha Sengupta)। সকলেই প্রায় এখানে প্রান্তিক স্তরের প্রতিনিধি, যাঁদের জীবন বেশি বিপর্যস্ত হয় এই ধর্মের নামের প্রহসনের খেলায়। যে যুদ্ধ মানুষ চায় না, যাঁদের কাছে বেঁচে থাকাই এক সংগ্রাম, সেখানে ধর্মের খেলায় তাঁদের জীবন বলি হলে চারপাশ নিঃশেষ হয়ে যায়। সেরকমই এক জীবন, তথা ধর্মের যুদ্ধ নিয়ে তৈরি ছবি 'ধর্মযুদ্ধ', দীর্ঘ দু বছর প্রতীক্ষার পর মুক্তি পাবে আগামী ১১ আগস্ট।