বাংলার জন্য আরও একটি গর্বের দিন। এবারে শ্রীলেখা মিত্র অভিনীত আদিত্য বিক্রম সেনগুপ্তের সিনেমা ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন ক্যালকাটা স্থান করে নিল ৭৮ তম ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে। এই সিনেমাটির স্ক্রিনিং করানো হয়েছিল অরিজন্তী সেকশনে যেখানে বিশ্বের সমস্ত নতুন ধরনের সিনেমার প্রিমিয়ার হয়েছিল। সেই ২০০০ সালে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের উত্তরা ছবির জন্য শেষ এই পর্যায় থেকে পুরস্কার তুলে নিয়েছিল বাংলা সিনেমা। তারপরে কিন্তু কুড়ি বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু, বাংলা সিনেমার ক্ষেত্রে কোনো সাফল্য আসেনি। এত বছর পরে বিশ্বের সিনেমার অন্যতম বড় বিভাগে জায়গা করে নিতে পেরে রীতিমতো খুশি হয়েছেন আদিত্য বিক্রম।বাঙ্গালীদের জন্য যে এই বিষয়টি অত্যন্ত গর্বের, সেটা আর হয়তো বলার অপেক্ষা রাখে না।
এই সিনেমাতে অভিনয় করেছেন শ্রীলেখা মিত্র, ব্রাত্য বসু, অরিন্দম ঘোষ এবং আরো অন্যান্যরা। স্পেশল স্ক্রীনিং এর আগে এইসবই কলাকুশলীরা রেড কার্পেটে হেঁটে গোটা বিশ্বের সিনেমার প্রতিযোগিতায় বাংলার জন্য একটি মাইলফলক স্থাপন করলেন। যদিও এর আগেও বিক্রমের একটি ছবি এই ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে জায়গা করে নিয়েছিল। সেটি ছিল ২০১৪ সালে রিলিজ হওয়া আসা যাওয়ার মাঝে।
ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের অনুষ্ঠান থেকেই শ্রীলেখা মিত্র নিজের আনন্দের কথা জানালেন। তিনি বললেন, " এরকম একটি ঐতিহ্যবাহী চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলা সিনেমার প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আমি অত্যন্ত খুশি। এটা আমার জীবনের সবথেকে বড় এবং সব থেকে গর্বের মুহূর্ত। দর্শকদের এই ছবি অত্যন্ত ভালো লেগেছে, জেনে আমি অত্যন্ত আপ্লুত। অনেকেই আমার কাছ থেকে আমার অটোগ্রাফ চাইতে এসেছিলেন। তবে এই চলচ্চিত্র উৎসবে আমি আদিত্য কে খুব মিস করছি। "
এই ছবিতে কাজ করার বিষয়ে শ্রীলেখা মিত্র বললেন, ' এই সিনেমার পরিচালক আদিত্য বিক্রম আমার থেকে আমার সেরাটা বের করে আনতে পেরেছেন। আমিও মনে করি, আমি অভিনয় যতটা জানি ততটা দিয়েই আমি এই ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি এই সিনেমাটা করতে পেরে অত্যন্ত খুশি হয়েছি।'
পরিচালক আদিত্য বিক্রম যদিও করোনাভাইরাস এর প্রটোকল এর কারণে এই চলচ্চিত্র উৎসবে উপস্থিত থাকতে পারেননি। কিন্তু তিনিও এই ছবির নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে অত্যন্ত আপ্লুত। তিনি বলেছেন, ' এরকম একটি প্রতিযোগিতায় একটি বাংলা সিনেমার নির্বাচিত হওয়া বাংলার পক্ষে অত্যন্ত গর্বের। বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের উত্তরা ছবিটি এই প্রতিযোগিতায় স্থান পাওয়া শেষ বাংলা সিনেমা ছিল। প্রায় দুই দশক পরে এই বিভাগে কোন বাংলা সিনেমা অংশগ্রহণ করতে পারছে। পাশাপাশি, এই বছর বাংলার কিংবদন্তি চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের মৃত্যুর শতবার্ষিকী। এই বছর ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবের মতো একটি জায়গায় বাংলা সিনেমার নির্বাচিত হওয়া আমাকে অত্যন্ত গর্বিত করেছে।'