এক বিয়ের সাজে সজ্জিত তরুণী, চারদিক জুড়ে চলছে তাঁরই বিয়ের আয়োজন। তাঁর শরীরে এক একটি অলঙ্কারের সঙ্গে, সংযোজিত হচ্ছে এক একটি কালসিটের দাগ। আস্তে আস্তে সেই কালসিটেগুলি যত গাঢ় হচ্ছে, অলঙ্কারের বহর তাকে তত ঢেকে দিচ্ছে। তরুণীর চোখে মুখে আতঙ্ক, এক নিঃশব্দ আর্তনাদ। নতুন জীবনে প্রবেশ করতে না করতেই এক অজানা অন্ধকারে তলিয়ে যাওয়া! এই পেষণ থেকে মুক্তির জন্য বিস্ফোরিত হয়ে যাচ্ছে তাঁর নেত্রযুগল। তবুও সেই তরুণী মেনে নিচ্ছে সবটা। কেন মেনে নিচ্ছে? নাহ্, এ প্রশ্নই জিজ্ঞেস করা 'পাপ'। আদতে এটি হল হইচই (Hoichoi) ওয়েব প্ল্যাটফর্মের সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত সিরিজ, 'সম্পূর্ণা'র (Sampurna) টিজারের অংশ। সোহিনী সরকার এবং রাজনন্দিনী পাল অভিনীত এই সিরিজটি, গত ২৯ জুলাই মুক্তি পেয়েছে হইচইয়ে।
রুপোলি পর্দার অংশ হলেও, প্রেক্ষাপটটি আমাদের অতি চেনা। একজন নারী, তথা বিবাহিতা নারীর প্রতি পরিচিত সামাজিক শোষণই, এই সিরিজের পটভূমি। বিবাহিত তরুণীর চরিত্রে রয়েছেন অভিনেত্রী ইন্দ্রানী দত্তের (Indrani Dutta) কন্যা, রাজনন্দিনী পাল (Rajnandini Paul)। সঙ্গে বিশেষ ভূমিকায় অভিনয় করছেন সোহিনী সরকার (Sohini Sarkar)। তিনিই হলেন ছবিতে 'সম্পূর্ণা'। সিরিজের নামটিও অর্থবহ। একজন স্বয়ংসম্পূর্ণ নারীই হলেন, 'সম্পূর্ণা'! কিন্তু তাঁর 'সম্পূর্ণা' হয়ে ওঠার পথ মোটেই সুগম নয়। সামাজিক লাঞ্ছনা, বঞ্চনা, অত্যাচার, শোষণ সবকিছুই এই পথের দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে চলে। মুখ বুজে সহ্য করে যান নারীরা। বিশেষত বিয়ের পর এই পথের অমসৃণতার তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। বিবাহ পরবর্তী জীবনের প্রত্যেক মানুষ ভাবেন, নারী যেন সংসারের পুতুল! তাঁকে এই নিষ্ঠুর যাঁতাকলে পিষে নিঃশেষ করে দেওয়ার অধিকার যেন তাঁদের আছে। বিয়ে যেন, পুরুষের এই স্বৈরাচারের 'সবুজ সংকেত'!
কিন্তু আর কতদিন! কতদিন নারীরা বিবাহ নামক পেষণে পিষে যেতে থাকবে? এর কি মুক্তি নেই? সেই খোঁজই দেবে 'সম্পূর্ণা' ওয়েব সিরিজটি। সায়ন্তন ঘোষালের (Sayantan Ghoshal) এই সিরিজ, সমাজের এক গুরুতর 'ইস্যু'কে প্রতিষ্ঠা করছে। মা বাবার দায়িত্ব, সব কিছুর আগে সন্তানকে মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার। কিন্তু মা বাবা সেদিকে লক্ষ্য না দিয়ে ভবিষ্যত তৈরির ইঁদুর দৌড়ে সন্তানকে সামিল করেন। ভালো পড়াশুনা, ভালো চাকরি, ঘরবাড়ি করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হলেও বেশিরভাগই যে মানুষ হিসেবে অসম্পূর্ণ থেকে যান, সেই ধারণাই পোষণ হয়েছে 'সম্পূর্ণা' সিরিজে। এই ছবিতে অভিনয় করেছেন প্রান্তিক ব্যানার্জী (Prantik Banerjee), নবাগত অনুভব কাঞ্জিলাল (Anubhav Kanjilal), লাবনী সরকারের (Laboni Sarkar) মত নামী ব্যক্তিত্ব। অনুভবকে দেখতে পাওয়া যাবে রাজনন্দিনীর স্বামীর ভূমিকায়।