দিন কয়েক আগে অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত এবং চিত্রপরিচালক তথা বাংলা ব্যান্ড চন্দ্রবিন্দুর গায়ক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় নবমীতে গরুর মাংস খাওয়া এবং গরুর মাংস রান্না করা নিয়ে একটি টিভি চ্যানেলে চ্যাট শোতে নিজেদের মতামত জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের ওই মন্তব্যের পর ঘটলো বিপত্তি। গরুর মাংস নিয়ে এরকম মন্তব্য ভালো লাগলো না বিজেপি কর্মী তথা আইনজ্ঞ তরুণজ্যোতি তিওয়ারির। তিনি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বাগুইআটি থানায় ১৯ জানুয়ারি ফাইল করলেন একটি এফআইআর। নিজের বক্তব্যে তরুণ জ্যোতি বললেন, "আমি কলকাতা হাইকোর্টে নিয়মিতভাবে প্র্যাকটিস করি। আমি একজন শান্তিপ্রিয় নাগরিক। সর্বোপরি আমি হিন্দু। আমি দেবী দুর্গার উপাসক। আমি গরুকে পূজো করি। গরুকে যে কাটতে পারে তার বিরুদ্ধে আমি ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত থাকবো।"
ভারতীয় সংবিধানকে উল্লেখ করে তরুণ জ্যোতি আরো বলেছেন, "সংবিধানের ৪৮ নম্বর ধারায় গো-হত্যা যে করবে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। এই ধারা মেনে উত্তর প্রদেশ এবং গুজরাটে গরু খাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এখনো তা হয়নি।" এই প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেছেন, পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের নবমীর দিন গরু খাওয়া এবং অভিনেত্রী দেবলীনা দত্তের জনসমক্ষে নবমীর দিন গরুর মাংস রান্না করার বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে আইন বিরুদ্ধ। তাই যখন আইনবিরুদ্ধ কোন কাজ করা হবে, তখন আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বৈকি।"
তবে শুধুমাত্র অনিন্দ্য এবং দেবলীনা নয়, তিনি কাঠগড়ায় তুলেছেন কলকাতা পুলিশকেও। কলকাতা পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তরুনজ্যতি বলেছেন, "আমি আইনের ছাত্র তাই আইনি পথে প্রতিবাদ করতে ভালোবাসি। দেখা যাক পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য পুলিশ পদক্ষেপ গ্রহণ করে কিনা। আমি আমার আইনি লড়াই চালিয়ে যাব। সবাইকে অনুরোধ করবো শালীনতার মাত্রা দেখে আইনি পথে পদক্ষেপ গ্রহণ করার। যদি পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তরফ থেকে কোনরকম হেলদোল না দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে তারা সরাসরি গরুর মাংস খাওয়া আইনসম্মত মনে করে থাকে। আপনি বুদ্ধিজীবী হয়ে গেলে যে হিন্দু ধর্মকে আক্রমণ করতে হবে সেরকমটা কিন্তু না। আর এই বিষয়টি বোঝানোর সময় হয়ে গিয়েছে।"
অন্যদিকে, এটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেবলিনা দত্তের স্বামী তথাগত মুখোপাধ্যায় বলেছেন, "বাগুইআটি থানায় তরুণ জ্যোতির এফআইআর গৃহীত হয়নি। কোর্টে ওনার সঙ্গে দেখা হবে। বিষয়টা দেখছেন বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। তবে এটা স্পষ্ট, বিজেপি যদি পশ্চিমবঙ্গে আসে তাহলে ৬ থেকে ৬০ কোন মহিলা নিরাপত্তা বলে আর কিছু থাকবে না। হিন্দুত্বের আড়ালে এই দলটি কট্টরপন্থী উগ্র মুসলমানদের মতো।"