বাংলায় চতুর্থ দফায় নির্বাচনী প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কার্যত হুঁশিয়ারি দিলেন প্রধানমন্ত্রী। শনিবার শিলিগুড়ির সভায় মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে একের পর এক অভিযোগ তুলেছেন। এবারের নির্বাচনে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘনঘন বাংলা আগমনে শাসকদল বারবার কটাক্ষ করেছেন। তার জবাব প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সভায় দিয়েছেন। কিন্তু আজকের সভায় প্রধানমন্ত্রীর কড়া জবাব যে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, তা রাজনৈতিক একাংশের মত।
ভোটের দিন কোচবিহারে ৫ জনের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, "কোচবিহারে যা হয়েছে খুব খারাপ হয়েছে। মৃতদের পরিবারকে আমার সমবেদনা জানাই।" কোচবিহারে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উস্কানিমূলক কথাবার্তাকে দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এদিনের সভায় বলেছেন, "দিদি এখন সভা থেকে বলছেন কী ভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরতে হবে। কী ভাবে ছাপ্পা ভোট দিতে হবে। আসলে বিজেপির দিকে সমর্থন দেখে দিদি ও তাঁর গুণ্ডাবাহিনী ঘাবড়ে গিয়েছে। তাই দিদি ও তাঁর গুণ্ডাবাহিনী এভাবে হিংসার ঘটনা ঘটাচ্ছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর দিকে আক্রমণ করছে। আমি কমিশনকে আবেদন জানাচ্ছি এর কড়া ব্যবস্থা নিতে।" রাজনৈতিক বিশ্লেষক একাংশের মত প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে স্পষ্ট যে রাজনৈতিক হিংসার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর প্রকাশ্য সভায় বলা বক্তব্য দায়ী।
এদিনের সভায় প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন কীভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা তফসিলি সম্প্রদায়ের মানুষদের ছোট করেছেন। তিনি বলেছেন, "দিদির এক নেতা বলেছেন তফসিলি সম্প্রদায়ের লোকেরা ভিখারির মতো আচরণ করে। এত বড় কথা। আসলে তফসিলি সম্প্রদায়ের লোকেরা বিজেপিকে সমর্থনে করায় দিদি রেগে যাচ্ছেন।" আজকের সভায় প্রধানমন্ত্রী একের পর এক অভিযোগ এনেছেন শাসক দলের বিরুদ্ধে। এতদিন কেন্দ্র সরকারের নানা প্রকল্প দিদির লোকেরা করতে দিচ্ছে না। মানুষকে ভয় দেখিয়ে আর আটকে রাখা যাবে না। কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার জন্য অনেক প্রকল্প করেছে। কিন্তু দিদির লোক তা পৌঁছতে দেয়নি। বিজেপি ক্ষমতায় এলে আপনারা কাটমানি ছাড়া সব প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।
চতুর্থ দফার নির্বাচন বাংলার ইতিহাসে কালো দিন। রক্তাক্ত বাংলায় ৫ টি তাজা প্রাণের বিনিময়ে কী পেল বাংলা? রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক হিংসায় বলি হল ৫ টি প্রাণ। মোদী মমতার পারস্পরিক বাদানুবাদ এই রাজনৈতিক হিংসার কারণ নয় তো? এ প্রশ্ন তুলেছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক একাংশ।