পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া এবং অভব্য আচরণের জন্য স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ (Abhishek Banerjee) দলের পাঁচ নেতা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করল ত্রিপুরার খোয়াই থানার পুলিশ। বুধবার তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ (Kunal Ghosh) এক টুইট বার্তায় একথা জানিয়েছেন। তিনি সেই টুইটে বলেছেন, "অন্যায় ভাবে ধৃত তৃণমূল কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য গুচ্ছের মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে অভিষেক, ব্রাত্য, দোলা, আমি, সুবলদা এবং প্রকাশদার বিরুদ্ধে আইপিসি ১৮৬/৩৪ ধারায় নিজের থেকে মামলা করেছে খোয়াই থানার পুলিশ। ভয় পেয়েছে বিজেপি।" এই ঘটনার পর ত্রিপুরার ঘটনা যে আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠল, মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।
উল্লেখ্য, রবিবার তৃণমূল কংগ্রেসের যুব নেতাদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে ত্রিপুরায় দফায় দফায় তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের টানাপোড়েন তৈরি হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা খোয়াই থানায় গিয়ে যুব তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতারের কারণ জানতে চান বলে দাবি। শুধু তাই নয়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যান্য নেতা মন্ত্রীরা খোয়াই থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসে পড়েন। সূত্রের খবর, এই ঘটনায় সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরপরই খোয়াই থানার পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ পাঁচ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, অভব্য আচরণ-সহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে।
অভিযুক্তদের তালিকায় আছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, সাংসদ দোলা সেন, কুনাল ঘোষ, প্রকাশ দাস এবং সুবল ভৌমিকের নাম। এঁদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অভিযোগ করা হয়েছে যে ধৃত তৃণমূলের যুব নেতাদের ছাড়াতে এঁরা অভব্য আচরণ করেছেন। অভিযোগ পত্রে আরও বলা হয়েছে, তৃণমূলের ওই পাঁচ নেতা মন্ত্রী খোয়াই থানার ওসি-র ঘরে ঢুকে চেঁচামেচি করেন। পুলিশের তরফে তাঁদের চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। ধৃত তৃণমূল কর্মীদের আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশকে বাধা দেওয়া হয়। পর্যাপ্ত পুলিশবাহিনী এবং মহিলা পুলিশ থাকা সত্ত্বেও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কোনও বলপ্রয়োগ করা হয়নি বলেও দাবি করেছে পুলিশ। সব মিলিয়ে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ পরপর কয়েকটি টুইট করেছেন। সেখানে তিনি স্পষ্ট দাবি করেছেন, "আমরা কোর্ট যেতে বাধা দিইনি। ধৃতদের সেকশন জানতে চেয়েছি। এসকর্ট দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ করছি।আইনজীবী আসা পর্যন্ত সময় চেয়েছি। বিজেপি থানা ঘিরেছিল।আমরাই ওদের নিয়ে কোর্টে বেরিয়েছি। কোর্টে সেদিন পুলিশ কোনো এরকম অভিযোগ করেনি।" এরপর তিনি বলেন, "আমরা আসল হামলাকারীদের গ্রেফতার চেয়েছি। তাদের ছবিও অনেকের কাছে রয়েছে। তার বদলে আক্রান্তরা গ্রেফতার। প্রতিবাদীরা গ্রেফতার। আইন মেনে ছাড়াতে যাওয়ারা গ্রেফতার। ভয় পেয়েছে বিজেপি।"