দেশে বিজেপির মত একটি অশুভ শক্তিকে পরাস্ত করে শুভ শক্তির জয়গান করতে পারেন শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েই মহালয়ার ঠিক আগের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার কালীঘাটে মাথার চুল কামিয়ে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করে তৃণমূলে যোগদান করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন ত্রিপুরার বিজেপির বিধায়ক আশিস দাস। দিন কয়েক ধরেই কলকাতায় রয়েছেন ত্রিপুরা রাজ্যের সুরমা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক। তপসিয়ার তৃণমূল ভবনে তাকে কয়েকবার দেখা গিয়েছিল বলেও তৃণমূল সূত্রের খবর। তখন থেকেই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, তিনি হয়তো বিজেপি পরিত্যাগ করে তৃণমূলে যোগদান করতে চলেছেন।
এবারে সরাসরি কালিঘাটে গিয়ে পুজো দিলেন আশিষবাবু। তারপর ত্রিপুরাবাসীর মঙ্গল কামনার জন্য যজ্ঞ করলেন তিনি। এরপর আদি গঙ্গার পাড়ে বসে মাথা নেড়া করলেন তিনি। তারপর জগন্নাথ দেবের পুজো দিয়ে গঙ্গা নমস্কার করে তিনি বললেন, "বিজেপি দল ছাড়লাম।" পাপের প্রায়শ্চিত্ত করে কালীঘাটে দাঁড়িয়ে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের প্রশাসনের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন বিধায়ক আশীষ দাস। দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বললেন, "বিজেপির ভোট ১.৫ শতাংশ থেকে একেবারে ২৫ শতাংশে নিয়ে গিয়েছিলাম। ২০১৮ সালে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছিলাম। কিন্তু বিজেপি শাসিত রাজ্যে অরাজকতা এবং একনায়কতন্ত্র চলছে। ভালোবাসা এবং ঘৃণা একে অপরের পরিপূরক।"
বিপ্লববাবু মানুষকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ। তিনি ঘোষণা করলেন, বিপ্লববাবু প্রশাসন থেকে বেরিয়ে এসে তিনি পাপের প্রায়শ্চিত্ত করে কালীঘাটের মত পবিত্র জায়গায় দাঁড়িয়ে বিধায়ক পদ এবং দল ছাড়ছেন। তিনি আরো বলেন, "২০২৩ সালে ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচন। ততদিন পর্যন্ত আমার মাথা ন্যাড়া থাকবে। শুধু আমি নই আগামী দিনে আরো অনেকেই বিজেপি ছাড়বেন।" আশিস বাবুর এই সমস্ত কর্মকান্ডের পরেই ত্রিপুরা বিজেপির মুখপাত্র সুব্রত চক্রবর্তী বললেন, 'সুরমার মানুষের সঙ্গে তিনি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। যে গণদেবতার ভোটে যিনি নির্বাচিত, তাদেরকে অপমান করলেন বিধায়ক। দলগতভাবে আশিস বাবুর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটা খুব শীঘ্রই আপনারা জানতে পেরে যাবেন।' অন্যদিকে ত্রিপুরার বিক্ষুব্ধ বিজেপি বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন বলছেন, এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। যদি জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হতো তাহলে আরো অনেক রাস্তা ছিল তার কাছে।