পশ্চিমবঙ্গের তৃতীয় দফার পুরভোট দরজায় কড়া নাড়ছে। আর কয়েক দিনের মধ্যেই নির্ধারিত হতে চলেছে ১০৮ পুরসভার হাজারের কাছাকাছি প্রার্থীদের ভাগ্য। তাই এই পুরভোটের আগেই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে কোন খামতি রাখতে চান না কোনো দলের প্রার্থীই। তার মধ্যেই এবার পুরভোটের আগে মতুয়াদের নিয়ে মিছিল করে এলাকায় একেবারে চমক সৃষ্টি করল উত্তর ২৪ পরগনা তৃণমূল নেতৃত্ব। সোমবার বনগায় হাজার পাঁচেক মতুয়া ভক্তকে নিয়ে মিছিল করে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। তার সঙ্গেই বনগাঁ পৌরসভার কয়েকজন তৃণমূল প্রার্থীও এই মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন। কিন্তু যেখানে, শান্তনু ঠাকুর বিধায়ক রয়েছেন সেখানে তৃণমূলের মিছিল কেন? এই নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে জল্পনা।
জোড়া ফুল শিবিরের তরফ থেকে বক্তব্য, এই মিছিল বিজেপির পায়ের তলার মাটি সরে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে অন্যদিকে এই মন্তব্যের বিরোধিতা করেছে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, এই মিছিলে জোর করে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, শুধুমাত্র দেখানোর জন্য। সোমবারের এই মিছিল শুরু হয়েছিল বনগাঁ পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ড থেকে এবং শেষ হয় বনগাঁ পৌরসভার ঘড়ির মোড় এলাকার শিমুল তলায়। তিন নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী গোপাল শেঠ, কুড়ি নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী নারায়ণ ঘোষ সহ আরো অনেকেই এই মিছিলে পা মিলিয়ে ছিলেন। অন্যদিকে এই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা বালা ঠাকুর।
এই মিছিলে মমতা বালার ঘোষণা, "সারা ভারতে মতুয়া সম্প্রদায়ের বনগাঁ মহাকুমা কমিটি ২২টি ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচার করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করতেই এই মিছিল আয়োজন করেছে মতুয়া সম্প্রদায়। এনআরসি নিয়ে হিন্দুত্ববাদী মানুষেরা মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের ভুল বুঝিয়ে ছিলো। ওরা কিছু করবেনা, এবং এতদিনে মানুষ সেটা বুঝে গিয়েছে। তাই তৃণমূলের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মানুষ।" অন্যদিকে তৃণমূল প্রার্থী গোপাল শেঠ বললেন, "মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা রাস্তায় নেমে বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের পাশে রয়েছেন। ঠাকুর হরিচাঁদ গুরুচাঁদের যে শিক্ষা ব্যবস্থা, তার প্রয়োগ ঘটিয়েছেন।" তবে তৃণমূলের এই মিছিলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। শান্তনু ঠাকুর এর গড়ে এই মিছিল আয়োজন হয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই বিজেপির কটাক্ষ আসতোই। বিজেপির বক্তব্য, "সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা বালা ঠাকুর সত্যকে বিশ্বাস করতে চান না। মমতা ঠাকুর তো ঠাকুর বংশের প্রতিনিধি নন, উনি ভিন্ন বংশ থেকে এসেছেন। আর মতবাদের মিছিলে হাঁটতে বাধ্য করা হয়েছে। ওনারা ভালো করেই প্রমাণ পেয়ে যাবেন, মতুয়ারা আসলে কাদের পাশে রয়েছে।"