বিতর্কিত মন্তব্য যেন বাংলার শাসকগোষ্ঠীর পিছু ছাড়তে চাইছে না। দিনকয়েক আগেই ফোনালাপে এক সাংবাদিককে অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলাকে কেন্দ্র করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ এবং গায়ক কবীর সুমন (Kabir Suman)। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও বিপক্ষ শিবিরকে উদ্দেশ্য করে কুমন্তব্য করতে শোনা গেল খড়গপুরের (khargapur) এক তৃণমূল (TMC) নেতাকে। নেতার মন্তব্যের বিরুদ্ধে একযোগে সরব হয়েছে বিজেপি (BJP)-সিপিএম (CPIM)।
অভিযুক্ত মন্তব্যকারীর নাম বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়। তিনি তৃণমূলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক। শনিবার খড়গপুর দু’নম্বর ব্লকের বলরামপুরে একটি সভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনটা আপনাদের দেখতে হবে। যখনই বিজেপি বা সিপিএম আপনাদের বাড়িতে প্রচারে যাবে, আমি আপনাদের অনুরোধ করব, ওরা এলেই প্রদীপ জ্বালিয়ে বরণ করবেন। থালার উপর একটা জুতো রাখবেন। যখনই ভোটের কথা বলবে, তখনই ঠাঁই ঠাঁই করে জুতো দিয়ে মারবেন”। এর সাথে আরও একাধিক অশ্রাব্য মন্তব্য করেন তিনি।
আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোমর কষে রাজনীতির রণাঙ্গনে নেমে পড়েছে বিজেপি-সিপিএম। বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তন্ময় দাস বিশ্বজিতের মন্তব্যের পাল্টা কটাক্ষ করে বলেছেন, “যেমন গাছ, তার তেমন ফল হবে। প্রাক্তন সাংসদ কবির সুমন যে কি ভাষায় কথা বলেছেন, তা সকলে শুনেছেন। মদন মিত্র (Madan Mitra) নিজেকে ‘প্লে বয়’ হিসাবে দেখান। এটা ওদের সংস্কৃতি। তবে সব ক্রিয়ারই সমান এবং বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে”। অন্যদিকে সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সম্পাদক মন্তব্যের নিন্দা করে বলেছেন, “এহেন মন্তব্য কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি। সভ্য সমাজে এ ধরনের মন্তব্য তৃণমূল নেতারাই করতে পারেন”।
নিজের দলের লোকের মন্তব্যে সায় দেয়নি তৃণমূলও। এবিষয়ে মাদপুরের তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতি বলেছেন, “(বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়) এরম মন্তব্য করা ঠিক হয়নি। এটা দল অনুমোদন করে না”। যদিও এরই মাঝে বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেছেন, “তবে বিজেপির দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh), সায়ন্তন বসু, অগ্নিমিত্রা পালরা যেভাষায় কথা বলেন, তাতে মানুষ চোখ, নাক, কান বন্ধ করে ফেলবেন”। সেইসাথে তাঁর সংযুক্তি, “ছেলেটি আমার কাছে স্বীকার করেছে, তার এমন কথা বলার কোনও ইচ্ছা ছিল না। সে জনগণের কথা তুলে ধরেছে মাত্র। ও দুঃখপ্রকাশও করেছে। আমরাও ওকে সতর্ক করে দিয়েছি”।