নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা বহু আগেই হয়েছে, শাসক ও বিরোধী দলগুলোর প্রার্থী তালিকাও ঘোষিত হয়েছে ইতিমধ্যেই। প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন এবং দিচ্ছেন, এলাকায় ঘুরে ঘুরে চালাচ্ছেন জনসংযোগ। প্রথম দফার নির্বাচনের সাত দিন আগে এসবের মাঝেও শাসক বিরোধী সংঘর্ষ এখনো অব্যহত।
ঝাড়গ্রাম থানার আগুইবানী গ্রাম পঞ্চায়েতের নেতুরা গ্রামে ৫৫ বছর বয়সী তৃণমূল কর্মী দুর্গা সোরেনের মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। শাসকদলের অভিযোগের তীর বিজেপির দিকে, যদিও তা অস্বীকার করেছে বিজেপি। ঠিক কি জানা গেছে? স্থানীয় সূত্র মারফত খবর, দুর্গা ও তার স্ত্রী চিকিৎসার জন্য নেতুরা যাবার পথে কিছু বিজেপি কর্মীর অশ্লীল গালিগালাজের স্বীকার হন। এর পাল্টা ওই স্থানেই বিকেলে কিছু তৃণমূল কর্মী ওই বিজেপি কর্মীদের ওপর চড়াও হন এবং বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য মানিক সাউয়ের ভাই তারক সাউকে মারধর করে দু’টি হাত ভেঙে দেয় বলে পাল্টা অভিযোগ ওঠে। তারককে হাসপাতালে আনার কিছুক্ষণ পর দুর্গা সোরেনকে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আনলে চিকিৎসকরা দুর্গা সোরেনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর উজ্জ্বল দত্তের দাবি, "তৃণমূল কর্মী দুর্গা সরেনকে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে হবে", যদিও বিজেপি এই অভিযোগ অস্বীকার করে তারকের ওপর অত্যাচার নিয়ে বিঁধেছে তৃণমূলকে। এই আকষ্মিক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায় এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর হস্তক্ষেপে তা নিয়ন্ত্রণে আসে। শাসক বিরোধী পারস্পরিক তরজা তুঙ্গে, মোতায়েন হয়েছে পুলিশ।
অন্যদিকে দিনহাটা নয়ারহাট আবুতারা এলাকায় বিজেপি কর্মীকে মারধর করে দলীয় কার্যালয়ে আগুন লাগানোর ঘটনায় অভিযোগ শাসকদলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। বিজেপি-র রাজ্য কমিটির সদস্য এবং মুখপাত্র দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, "রবিবার সন্ধ্যায় নয়ারহাট বাজারে বিজেপি-র একটি মিছিল ছিল। মিছিল শেষে বিজেপি কর্মীরা বাড়ি ফিরে গেলে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আবুতারায় দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালায়। এক কর্মীকে মারধর করা হয়। শুধু তাই নয়, দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করে তারা আগুন ধরিয়ে দেয়। বিজেপি কর্মী এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় আগুন নেভানো হয়।" বিজেপি-র আরও অভিযোগ, তাদের এক কর্মী সুনীল শীল দলীয় কার্যালয়ে গেলে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা তাঁকে বেধড়ক মারধর করে। এই সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। দিনহাটা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, বিজেপি-র প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় নিজেদের মধ্যেই গোষ্ঠী কোন্দল শুরু হয়েছে। সে কারণে বিজেপি অন্য গোষ্ঠীর লোকেরাই দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোন যোগসুত্র নেই। এলাকা জুড়ে অশান্তি ছড়ায় এবং পুলিশ মোতায়েন করা হয়।