সম্প্রতি বাংলাদেশের (Bangladesh) ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি (BJP)। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর ঘটে চলা লাগাতার আক্রমণের বিরুদ্ধে বারবার তীব্র বাক্যবাণ প্রয়োগ করেছেন এরাজ্যের একাধিক বিজেপি নেতৃত্ব। এবার রাজ্য সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেসের 'মুখে কুলুপ' নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেল রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে। এদিন তিনি রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলাদেশ প্রসঙ্গে 'নিশ্চুপ' মনোভঙ্গি নিয়ে তিনি তীব্র কটাক্ষ করেছেন।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া এতবড় ঘটনা নিয়ে রাজ্য সরকার কিংবা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে কোন বিবৃতি পাওয়া যায়নি। যে ধরণের বিবৃতি আশা করা হয়েছিল, তা না পাওয়ায় তীব্র কটাক্ষ করতে শোনা গেল বিজেপির তরফে। পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্র জাগো বাংলায় প্রধানমন্ত্রীর 'নীরবতা' নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, "আপনারা ভবিষ্যতে জানতে পারবেন প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কথা বলেছেন নাকি বলেননি।" বুধবার রাজ্য বিজেপির তরফে বরং পাল্টা অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নিয়ে একটা শব্দও খরচ করেননি।
অন্যদিকে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ-সহ অসংখ্য বিজেপি নেতৃত্ব গতকাল দিল্লির যন্তর-মন্তরে বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর মৌলবাদী হামলার বিক্ষোভ করেছেন। দিলীপ ঘোষ তাঁর ফেসবুক ওয়ালে বলেছেন, "বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর বাড়তে থাকা অত্যাচার, দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে হামলার প্রতিবাদে আজ দিল্লির যন্তর মন্তরে অবস্থান বিক্ষোভ ও ধর্ণা মঞ্চ। অত্যাচারিত প্রতিটি হিন্দু ভাইবোনদের পাশে আমরা আছি। তাঁদের সম্মানের সঙ্গে বসবাসের অধিকারের জন্য আমরা লড়াই করব।" এদিকে বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ নিয়ে সরব হয়েছেন। বাংলাদেশের এই ঘটনাকে তিনি 'অতি উদ্বেগজনক' আখ্যা দিয়েছেন। সেইসঙ্গে প্রয়োজনে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ভারত সরকারের আলোচনা হতে পারে বলেও তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, দুর্গা পুজোর মধ্যেই ফের অশান্ত বাংলাদেশ। দশমীর দিন বাংলাদেশের মন্দিরে হামলা চালানোর ঘটনা ঘটেছিল।বাংলাদেশের নোয়াখালিতে অবস্থিত ইসকনের মন্দিরে গত শুক্রবার হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছিল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ইসকনের অভিযোগ, ওই মন্দিরের কিছু অংশে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকী মন্দিরে থাকা ভক্তদের মারধরও করা হয়েছে বলে ইসকনের তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল। এর আগে অষ্টমীর দিন কুমিল্লার বহু পুজোমণ্ডপ, প্রতিমা ভাঙচুর ও আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠেছিল। কেবল কুমিল্লা নয়, চাঁদপুর, গাজিপুর, কুড়িগ্রাম, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার প্রভৃতি এলাকায় এমন মন্দির ভাঙচুরের অভিযোগ আসে। সরকারের তরফে নামানো হয় সেনা। এই ঘটনার পর বাংলাদেশ বিষয়টি নিয়ে ভারতে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়।