বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই বলছেন, "শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা?" কবি ভাস্কর চক্রবর্তী শীতকালে তিনমাস ঘুমিয়ে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু বাঙালি শীতকাল এলেই বেরিয়ে পড়েন ঘরের বাইরে। দূরে না হোক, কাছে পিঠে ঘুরে আসা চাই-ই চাই। কাছাকাছির মধ্যে অনেকেই যান সুন্দরবন। কপালে থাকলে হিজল, গোলপাতা, ক্যাওড়ার জঙ্গলে লাল-হলুদ ডোরাকাটা দক্ষিণরায়ের সাক্ষাৎ মিললেও মিলতে পারে। সঙ্গে সংকীর্ণ নদীপথের উচ্ছ্বলতা এবং জঙ্গলের মায়াবী সৌন্দর্য মুগ্ধ করবেই।
চলতি বছরের শীতকালের শুরুতেই গত এক সপ্তাহের মধ্যেই পরপর দু'বার সুন্দরবনে (Sundarban) দক্ষিণরায়ের দেখা মিলল। পর্যটকদের ক্যামেরায় ধরা পড়ল সেই ছবি। জঙ্গল থেকে লোকালয়ে পৌঁছে মানুষ দেখেই দেদৌড়। সূত্রে খবর, গতকাল বিকেলে সজনেখালি রেঞ্জের পিরখালি ৫ নম্বর বাঁকিতে দেখা মিলল দক্ষিণরায়ের। সেই ছবি ক্যামেরা বন্দি করলেন পর্যটকেরা। সাধারণত জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে আসে না রয়েল বেঙ্গল টাইগার। তবে মাঝে মাঝেই জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে পৌঁছে যায়। তখনই দেখা মেলে দক্ষিণরায়ের।
এই ঘটনার দিন দুয়েক আগেও দেখা মিলেছিল দক্ষিণরায়ের। সুন্দরবন কোস্টাল থানার ১০ নম্বর ঘেড়িতে দেখা মিলেছিল তার। গত এক সপ্তাহের মধ্যে পরপর দু'বার লোকালয়ে বাঘ চলে আসার ঘটনায় যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সাধারণত এত ঘনঘন বাঘ লোকালয়ে আসে না। নিশ্চয়ই কোন সমস্যা হয়েছে। যদিও আচমকা বাঘের হানায় যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেই নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক তো আছেই। যদিও বন দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। লোকালয়ে বাঘ আসা আটকাতে ১০৫ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বেড়া দেওয়া আছে। জঙ্গলের ভেতর ১৭ টি বন দফতরের ক্যাম্প রয়েছে। কোন বাঘ আচমকাই বেরিয়ে পড়লে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
শীতকাল এলেই সুন্দরবন চত্বরে চড়ুইভাতির আড্ডা জমে। দিন দুয়েকের জন্য অনেকেই বেরিয়ে পড়েন। জঙ্গলের সৌন্দর্য দেখার পাশাপাশি যদি আচমকাই দক্ষিণরায়ের দেখা মেলে তাহলে তো আনন্দের শেষ নেই। তার সঙ্গে আনুষঙ্গিক বিপদের দিকেও সতর্ক নজর রাখতে হয়। বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, আগামী দিনে আরও অত্যাধুনিক ফেন্সিং দেওয়া হবে। যা কেটে বাঘ সহজে বাইরে বেরোতে পারবে না। বন দফতর আশ্বস্ত করলেও ভয় কাটছে না সাধারণ মানুষের।