কালিয়াচক (Kaliachak) হত্যাকাণ্ডের ৭০ দিনের মাথায় চার্জশিট পেশ করল পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের বিরুদ্ধে খুন, তথ্যপ্রমাণ লোপাট, খুনের চেষ্টা অভিযোগ-সহ একাধিক ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্তকারীরা ২৭৩ পাতার দীর্ঘ চার্জশিটে ৪৪ জনের সাক্ষ্যসহ খুনের ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তথ্য তুলে ধরেছেন। ধৃত অভিযুক্ত আপাতত পুলিশি হেফাজতে আছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
উল্লেখ্য, গত ১৯ জুন কালিয়াচকের ১৬ মাইল এলাকায় ৪ জনের দেহ উদ্ধার হয়। জানা যায়, বছর ১৯-এর এক যুবক মহম্মদ আসিফ তার বাবা, মা, ঠাকুমা এবং বোনকে খুন করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। খুনের পর বাড়ি লাগোয়া গুদামঘরে দেহ পুঁতে রাখার অভিযোগ ওঠে। এমনকী ধৃত আসিফ তার দাদাকে খুনের চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ ওঠে, যদিও তিনি অল্পের জন্য বেঁচে যান। এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। তদন্তকারী দল ৭০ দিনের মাথায় ২৭৩ পাতার চার্জশিটে উল্লেখ করেছেন, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ধৃত আসিফ এই নৃশংস ঘটনা ঘটিয়েছিল। তথ্য প্রমাণ লোপাটের জন্য হত্যার পর বাড়ি লাগোয়া গুদাম ঘরে গর্ত করে দেহ পুঁতে দেয় এই অভিযুক্ত।
পুলিশের কাছে জেরায় ধৃত আসিফ জানিয়েছে, প্রথমে পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেহ অচেতন করে। এরপর মুখে লিউকোপ্লাস্ট লাগিয়ে বাড়ির চৌবাচ্চার জলে চুবিয়ে হত্যা করা হয়। বেঁহুশ অবস্থার পর জ্ঞান ফিরে এলে ভাইয়ের সঙ্গে তার ধস্তাধস্তি হয়। এরপর ধৃত মহম্মদ আসিফের দাদা আরিফ কোনমতে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এরপর অভিযুক্ত আসিফ অনবরত ফোনে নিজের দাদাকে খুনের হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ। তিনমাস পর আরিফ নিজেই সমস্ত পুলিশকে জানায়। আরিফের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসিফের আরও দুই বন্ধুকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র।
উল্লেখ্য, ঘটনার পর থেকেই আরিফ পালিয়ে যায়। আর অভিযুক্ত আসিফ একাই বাড়িতে থাকত। পাড়া প্রতিবেশীদের জানিয়েছিল বাড়ির লোক কোথাও বেড়াতে গেছে। এমনকী বাড়িতে কাজের লোককেও ঢুকতে দেয়নি। অনলাইনে অর্ডার দিয়ে খাবার খেত। আশেপাশের লোকজনের সন্দেহ হয়। যদিও শেষরক্ষা করতে পারেনি আসিফ। ৭০ দিনের মাথায় পুলিশ চার্জশিট জমা দিয়েছে। যেখানে খুন, তথ্যপ্রমাণ লোপাট, খুনের চেষ্টা-সহ বেশ কিছু ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।