একুশের বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election) ভরাডুবির পর থেকেই এখনও পর্যন্ত নিজেদের চূড়ান্ত হারের কারণ ব্যাখ্যার চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। রাজ্যে একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী সিপিএম (Cpim) দল বর্তমানে 'শূন্য'-তে অবস্থান করছে। এই হারের কারণ নিয়ে কম আলোচনা হয়নি। কখনও আইএসএফের সঙ্গে জোট কিংবা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Bandyopadhyay) জনমোহিনী প্রকল্পের চূড়ান্ত বিরোধিতা তাদের পরাজয়ের পথ পরিষ্কার করেছে মত একাংশের। আবার দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা দিকটিও অনেকেই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। নিজের দলের প্রাক্তন সৈনিকদের একাংশ মাঝেমধ্যেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। পার্টির 'কোড অফ কনডাক্ট'-এর কথা স্মরণ করিয়ে সাময়িক চুপ করিয়ে দিলেও দলের ভেতরের অসন্তোষ চাপা থাকেনি।
বৃহস্পতিবার কৃষ্ণনগরের পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে দলের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক আশু ঘোষের স্মরণসভায় এসেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। সেখানে সূর্যকান্ত মিশ্র স্পষ্ট জানিয়েছেন, জাতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী ঐক্যে তৃণমূলের সঙ্গে একজোট হয়ে বিরোধিতায় সামিল হতে কোন আপত্তি নেই, তবে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখবে সিপিএম। তার যুক্তি হিসেবে দলের রাজ্য সম্পাদক বলেছেন, জাতীয় স্তরে তৃণমূল কোন অবস্থান নেবে সেটা তাদের দলের নিজস্ব ব্যাপার, তবে রাজ্যে তৃণমূল 'স্বৈরাচারী' শাসন চালাচ্ছে। বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। বিরোধী শূন্য পঞ্চায়েত কিংবা পুরসভা দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে তৃণমূল। এমন চলতে থাকলে রাজ্যে বিরোধী বলে কিছুই থাকবে না।
তাহলে কি কেরল মডেল বাংলায় করতে চাইছেন সূর্যবাবুরা? অর্থাৎ জাতীয় স্তরে ও বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের সমঝোতা থাকলেও কেরলে বামেদের চক্ষুশূল কংগ্রেস। সেই ধারাই কি রাজ্যের তৃণমূলের সঙ্গে করতে চাইছে সিপিএম? এমনই প্রশ্ন তুলেছেন একাংশ। সিপিএমের স্পষ্ট দাবি, কেন্দ্রে বিজেপির বিরোধিতার পাশাপাশি রাজ্যেও তৃণমূল বিরোধিতা জারি থাকবে। যাঁরা বলছেন রাজ্যের পক্ষে ধীরে চলা নীতি অনুসরণ করতে, তাঁদের এই তৃণমূলকে বুঝতে ভুল হচ্ছে।