মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই নাকি মা সারদা! তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মাজির বিবৃতিকে ভিত্তিহীন আখ্যা দিলেন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ। বৃহস্পতিবার একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে তিনি বলেন, "আমাদের দীর্ঘ সাধুজীবনে শ্রীশ্রী মায়ের সংস্পর্শে আসা সন্ন্যাসী এবং গৃহী ভক্তদের সান্নিধ্যে আমরা এসেছি। তাঁদের কারও মুখে আমরা ওই কথা শুনিনি। তিনি কোথা থেকে এই তথ্য পেলেন?" যদিও নিজের বক্তব্য তুলে ধরার সময় স্বামীজি নির্মলের নামোল্লেখ করেননি। 'রাজনৈতিক নেতা' হিসেবে অভিহিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি একটি ভিডিওতে নির্মল মাজি বলেছিলেন, "মা সারদা মৃত্যুর কিছু দিন আগে স্বামী বিবেকানন্দের সতীর্থ সন্ন্যাসীদের বলেছিলেন, আমি কালীঘাট মন্দিরে যাই। হরিশ চ্যাটার্জী স্ট্রিটে দিদি যেখানে থাকেন, সেই রাস্তা দিয়ে তিনি যেতেন। মা সারদা বলেছিলেন, মৃত্যুর এত দিন পরে কালীঘাটের কালীক্ষেত্রে মানুষ রূপে জন্ম নেব। ত্যাগ, তিতিক্ষা, সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে যাব। সংখ্যাতত্ত্বের হিসেবে মা সারদার মৃত্যুর পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মের সময়টা সেই অঙ্ক মিলিয়ে দিচ্ছে।" তিনি আরও বলেন, "তিনিই (মমতা) মা সারদা, তিনিই ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল, সিস্টার নিবেদিতা, খড়ের দুর্গা। অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে তাঁর জন্ম। তাই মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু সবেতেই তিনি পাশে রয়েছেন।"
জানা গিয়েছে, এরপরেই নাকি মা সারদার নানান ভক্তবৃন্দ স্বামী সুবীরানন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে। তাদের কাছে সত্যাতিসত্য বার্তা পৌঁছাতেই ভিডিওতে বলেন, "আমরা যথেষ্ট উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, সম্প্রতি কোনও এক রাজনৈতিক নেতা প্রকাশ্য বক্তৃতায় বলেছেন যে, শ্রীশ্রী দেবী সারদা মা না কি দেহত্যাগের আগে রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজদের বলে গিয়েছেন, তিনি এর পরে মানবীরূপে দক্ষিণ কলকাতায় আবির্ভূত হবেন এবং তখন তিনি ত্যাগ, তিতিক্ষা, সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে যাবেন। শ্রীশ্রী মা সারদাদেবী সম্পর্কে রামকৃষ্ণ মঠ এবং রামকৃষ্ণ মিশন এবং অন্যান্য প্রকাশন সংস্থা থেকে যে কয়েকটি প্রামানিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে তার কোনওটিতেই এই তথ্য নেই।" তিনি আরও বলেন, "আমাদের পরম আরাধ্যা সারদাদেবীর মর্যাদাহানি করেছেন। ক্ষোভ ও মর্মবেদনা প্রকাশ করার কোনও উপযুক্ত ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। তিনি শুধু মহীয়সী নারীই নন, তিনি সীতা, রাধারানি, বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী পর্যায়ের আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব।" ভবিষ্যতে যেন কেউ এই জাতীয় অযৌক্তিক তত্ব না বলেন তার জন্য আবেদন জানিয়েছেন তিনি।