গঙ্গাসাগর মেলায় মানুষের প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত হোক এবং অন্তত এক মাসের জন্য পশ্চিমবঙ্গের ঢাকা জেলার পুরভোট পিছিয়ে দেওয়া হোক, এই দাবি নিয়ে এবার সোচ্চার বঙ্গ বিজেপি। আগামী ২২ শে জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের চারটি পৌরসভা এলাকায় পুরভোট গ্রহণ করার কথা। তার মধ্যেই আবার শুরু হয়ে গিয়েছে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ। তাই এই পরিস্থিতিতে অন্তত এক মাসের জন্য যেন ভোট পিছিয়ে দেওয়া হয়, সেই দাবি নিয়ে এবার সোচ্চার হলেন বঙ্গ বিজেপি নেতারা। বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য আজকের সাংবাদিক বৈঠক থেকে এই দাবি জানালেন।
তিনি আরো বললেন, যে সমস্ত রাজ্য থেকে পুণ্যার্থীরা গঙ্গাসাগর মেলায় যোগদান করতে আসেন সেই রাজ্যের তরফেও যেন কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। সম্পূর্ণ পশ্চিমবঙ্গের উপরে চাপ না দিয়ে প্রত্যেক রাজ্যকে সাহায্য করার আবদার রাখলেন বঙ্গ বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তার কথায়, 'আমি রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আবেদন জানাচ্ছি, তিনি যেন এই মুহূর্তে অন্তত এক মাসের জন্য চারটি পুরসভার নির্বাচন পিছিয়ে দেন। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। এই অবস্থায়, যদি এক মাসের জন্য পুরসভার ভোট স্থগিত হয়, তাহলে সরকারের খুব একটা অসুবিধা হবেনা, কিন্তু করোনাভাইরাস এর ছড়িয়ে পড়া অনেকাংশে কমবে। এমনিতেই প্রায় দুই বছরের জন্য পুরভোট পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে করোনাভাইরাস এর জন্য। আর যদি একমাস পিছিয়ে যায় তাতে কিছু সমস্যা হবে না।'
প্রসঙ্গত, বিধান নগর, আসানসোল, চন্দননগর এবং শিলিগুড়ি পুরসভার পুরভোট হওয়ার কথা আগামী ২২ জানুয়ারি। ইতিমধ্যেই জোরকদমে এই চারটি নির্বাচনের জন্য প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে। শাসক দল থেকে শুরু করে বিরোধী দল সকলেই জোরদার প্রচার করতে শুরু করেছেন এই চারটি পৌরসভায়। এ প্রসঙ্গে শমীক ভট্টাচার্য প্রশ্ন তুললেন, হাওড়া পুরসভা নির্বাচন প্রায় আড়াই বছর ধরে পিছোচ্ছে, কিন্তু, এই চারটি পৌরসভা এলাকার সঙ্গে হাওড়া পুরসভার ভোট নেওয়া হচ্ছে না কেন?
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার সূত্র ধরে শমিকের বক্তব্য, মমতা বন্দোপাধ্যায় কিছুদিন আগে জানিয়েছিলেন, আগামী ১৫ দিন পশ্চিমবঙ্গের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে। এই অবস্থায়, যদি করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে তাহলে আখেরে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষতি। সেই কথার সূত্র ধরেই শমীক ভট্টাচার্য বললেন, ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন একাধিক ডাক্তার, নার্স এবং পুলিশকর্মীরা। জরুরী পরিষেবা সঙ্গে যুক্ত একাধিক ব্যক্তি করোনাভাইরাস আক্রান্ত। এই অবস্থায় যদি আবার পুরোপুরিভাবে তাহলে সাধারণ মানুষ খুব সহজেই করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে পড়বেন। এই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তিনি আর্জি রেখেছেন, যেন অন্তত এক মাসের জন্য এই চারটি পৌরসভার পুরভোট পিছিয়ে দেওয়া হয়।