সুন্দরবনে হোগল নদীর নদীবাঁধ ভেঙে জলের তলায় তলিয়ে গেল ৩০ টির বেশি বাড়ি। শুক্রবার সকালে বাসন্তী ব্লকের রাধাবল্লভপুর গ্রামের এই ঘটনায় শোকের ছায়া। পুজোর মুখে ঘরছাড়া হলেন প্রায় ৩০ টি পরিবার। যদিও হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গত কয়েক দিন ধরেই নদীবাঁধ গুলো অত্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থায় ছিল। নদীতে জলস্তর বাড়ায় নদীর দুই তীরে থাকা বাড়িগুলো ক্রমাগত জলে ভাসছিল বলে খবর। একদিকে প্রবল বৃষ্টি, অপরদিকে ক্রমাগত ঘূর্ণাবর্তের কারণে সুন্দরবনের বেশিরভাগ নদীতে জলস্তর বাড়ছিল। বিশেষ করে নদী তীরবর্তী বাড়িগুলোর পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক অবস্থায় ছিল। সাধারণ মানুষ পলিথিন, বালির বস্তা দিয়ে নদীবাঁধ গুলি ধরে রাখার চেষ্টা করলেও শেষরক্ষা করতে পারেননি বলে খবর। এমন অবস্থায় শুক্রবার কাকভোরে সবাই যখন ঘুমিয়ে ছিলেন, সেইসময় হুড়মুড়িয়ে ৩০ টির বেশি বাড়ি নদীগর্ভে ভেসে যায়। আতঙ্কে মানুষ এদিক ওদিক দৌড়তে থাকেন। অনেকেই নদীতে ভেসে যান। স্থানীয়রা প্লাস্টিকের ড্রাম ফেলে তাঁদরকে কোনমতে উদ্ধার করেছেন বলে খবর। ঘরে থাকা অল্প সামগ্রী উদ্ধার করতে পারলেও বেশিরভাগ জিনিসপত্র নদীতে ভেসে গেছে। জোয়ারের জলের তীব্রতায় কিছুই প্রায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, গত কয়েক দিন ধরেই হোগল নদী তীরবর্তী কয়েকটি বাড়ি বিপজ্জনক অবস্থায় ছিল। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি, এই নদীবাঁধ গুলি কংক্রিটের হলে এই সমস্যা হত না। প্রশাসনের কাছে বহুবার দরবার করার পরেও এ সুবিধা মেলেনি। এমন আবস্থায় পুজোর মুখে গৃহহীন হলেন অসংখ্য মানুষ। প্রশাসনের তরফে জানা গেছে, ইতিমধ্যেই সেচ দফতরের লোকজন গোটা এলাকা খতিয়ে দেখেছেন। খুব শীঘ্রই বাঁধ মেরামতির কাজ করা হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের রিলিফের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই সমস্যার সমাধান করা হবে। অনেকেই স্থানীয় ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।