হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষাকাল সমাগত। মৌসুমি বায়ুর আগমনে গরমের দাবদাহ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। রোজ দিন প্রায় সন্ধ্যার সময় হালকা ঝড়বৃষ্টির কারণে সেই প্যাচপ্যাচে গরমের ভাবটা ততটা নেই। অন্যদিকে উত্তরবঙ্গে তো মৌসুমি বায়ু আগেই ঢুকে গেছে। বৃষ্টি তো ভালোই হচ্ছে। পরিপূর্ণ বর্ষাকাল আগত না হলেও গরমের দাপট অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। এমন পরিস্থিতিতে গরমের দোহাই দিয়ে স্কুল বন্ধ রাখার কারণ কী স্পষ্ট নয় শিক্ষক থেকে অভিভাবক মহলে।
এবার প্রচণ্ড গরমের দাপটে টানা ৪৫ দিন স্কুল বন্ধ ছিল। ফের রাজ্য সরকারের নির্দেশিকায় ১১ দিন ছুটি বাড়ানো হয়েছে। সর্বমোট ৫৬ দিন অর্থাৎ প্রায় ২ মাস বন্ধ স্কুল। ২৭ জুন থেকে ফের স্কুল খোলার সম্ভাবনা। একাংশের অভিমত, ২৭ জুনের পরও যদি গরমের দাপট না কমে তখনও কি সরকার ফের স্কুল বন্ধ করে দেবে? গরমের 'অজুহাতে' বারবার স্কুল বন্ধ রাখার কোন সঙ্গত কারণ নেই বলছেন অধিকাংশ শিক্ষক এবং অভিভাবক দল।
এদিকে রাজ্য সরকারের গরমের ছুটি বৃদ্ধি নিয়ে তোপ দেগেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। প্রায় ৬০ দিনের গরমের ছুটি নিয়ে কার্যত রাজ্য সরকারকে তুলোধোনা করলেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, "রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার মেরুদন্ড ভেঙে দিয়ে পরবর্তী প্রজন্মকে ভাতাজীবী সম্প্রদায়ে পরিণত করতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।"
সমাজের আর এক অংশের দাবি, স্কুল বন্ধ রেখে সরকার আসলে স্কুলগুলিতে থাকা শিক্ষক ঘাটতি আড়াল করতে চাইছে। স্কুল খোলা থাকলে শিক্ষকের প্রয়োজন, আর স্কুল যদি খোলাই না থাকে শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজন কী! একই ভাবে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, "মাসের পর মাস স্কুল ছুটি থাকলে নিয়োগ করতে হয় না নতুন শিক্ষক, খরচ হয় না পরিকাঠামোতেও। সেই টাকায় দিব্যি চালানো যায় লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। শিশুদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে গেলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যায় আসে না।"
ইতিমধ্যেই সমাজের সর্বস্তরে স্কুল খুলে দেওয়ার আর্জি উঠেছে। গরমের অজুহাতে স্কুল বন্ধ রাখার কোন সঙ্গত কারণ নেই বলছেন একাংশ। এইভাবে চললে আগামী দিনে শিক্ষা ব্যবস্থায় ঘোর সংকট নেমে আসবে বলছেন একাংশ। গরম এর আগেও পড়ত, কিন্তু টানা প্রায় দু'মাস ছুটি নজিরবিহীন বলছেন ওয়াকিবহাল মহল।