করোনা (Corona) সংক্রমনের দ্বিতীয় ঢেউ এপ্রিল মাসের শুরুতে আছড়ে পড়েছিল গোটা দেশজুড়ে। বেহাল অবস্থা ছিল বাংলার। প্রতিদিন দেশজুড়ে সংক্রমণ লাখের ঘর স্পর্শ করেছিল। তবে গোটা দেশজুড়ে একাধিক রাজ্যে লকডাউন এবং বিধিনিষেধের জন্য অনেকটাই সংক্রমণ কমেছে। তবে এখনও নিপাত হয়নি ওই মারণ ভাইরাসের। এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে সংগ্রামের জন্য গোটা দেশজুড়ে চলছে টিকাকরন প্রক্রিয়া। কিন্তু এরমধ্যেই ফের ভ্যাকসিন সরবরাহ নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন। তিনি আজ অর্থাৎ বুধবার নবান্নের এক বৈঠকে উপস্থিত থেকে বলেছেন, "আমাদের কাছে ভ্যাকসিন নেই। তাই কলকাতায় শুধু দ্বিতীয় ডোজ চলছে। এরকম কম সরবরাহ পেলে খুব তাড়াতাড়ি টিকা করন প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে।" কেন্দ্রের বিরুদ্ধে গলায় সুর তুলে তিনি বলেছেন, "উত্তরপ্রদেশ সরকার সাড়ে ৩ কোটি, মহারাষ্ট্র ৩ কোটি ডোজ পাচ্ছে। এমনকি রাজস্থানের মত ছোট রাজ্য বেশি ভ্যাকসিন পাচ্ছে। তাহলে বাংলা পাচ্ছে না কেন?" পরিসংখ্যান জানিয়ে তিনি বলেছেন যে রাজ্যে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিনের অভাবে দ্বিতীয় ডোজ পাচ্ছে না রাজ্যের প্রায় সাড়ে ৮ লাখ মানুষ।
ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য কেন্দ্র সরকারকে তুলোধোনা করার পাশাপাশি আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নকল আইএএস অফিসার দেবাঞ্জন দেবের ভ্যাকসিন কাণ্ড নিয়ে মন্তব্য রেখেছেন। তিনি বলেছেন, "নকল ক্যাম্প করার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ওকে ধরেছি। ওর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শাস্তির জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। এই ঘটনা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, এর সাথে সরকারের কোন যোগ নেই। এরকম কাজ যারা করছে তারা সন্ত্রাসবাদের চেয়েও ভয়ঙ্কর।" আসলে বেশ কিছুদিন ধরেই খবরের শিরোনামে রয়েছে যে তৃণমূল কংগ্রেসের সাথে কি কোন ভাবে যোগাযোগ রয়েছে প্রতারক দেবাঞ্জন দেবের? এমনকি একাধিক বিজেপি নেতা এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সরাসরি যোগাযোগের দাবি করেছেন। পাল্টা জবাব দিয়ে তিনি বলেছেন, "হিংসার ঘটনা প্রমাণ করতে ভুয়ো ছবি ভাইরাল করা হচ্ছে। কেউ কেউ সেই ছবি ইচ্ছে করে ভাইরাল করছে। এই জাল টিকাকান্ডের পেছনে বিজেপির হাত নেই, কে বলতে পারে!"
অন্যদিকে আজ নবান্নে কাঁথি সমবায় ব্যাংকের বিতর্ক সম্বন্ধে মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কয়েকদিন আগেই ব্যাংকের সামনে তৃণমূল কংগ্রেস বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। তাদের অভিযোগ যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বারবার তার প্রভাব খাটিয়ে কাঁথি সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে আসছেন। কিন্তু রিজার্ভ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী কোন সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান পরপর দুবার এর বেশি থাকা যায়না। এই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বলেছেন, "কন্টাই ব্যাংকের তদন্ত বারবার আটকে দেয়া হচ্ছে কেন? যেখানে অভিযোগ পাবো সেখানেই তদন্ত করব।" নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, "কাঁথি ব্যাংকে চুরির বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ অডিট হচ্ছে। তাই রিট পিটিশন করে বসে আছে। এত ভয় কেন? আটকে দেওয়া হচ্ছে। তবে তদন্ত হবে। অর্থ দপ্তর নিজে তদন্ত করবে। দুর্নীতির অভিযোগ আছে সেখান থেকে।"