বুধবার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে (Netaji indoor stadium) রাজ্যের প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক (administrative review meeting) করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। রাজ্যের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প এবং সেগুলির বর্তমান অবস্থান নিয়ে আলোচনা করার জন্যই এই সভার আয়োজন করা হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন সমস্ত জেলার জেলাশাসক (DM) এবং পুলিশ সুপার (SP)। তাঁদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, ‘মানুষের সব অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে’।
আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নিজের দফতরের কাজের খেয়াল রাখতে হবে। শুধু পয়সা দিলাম আর মেলা করলাম, সেটা হলে চলবে না। উপর তলার অফিসারেরা নিচের তলায় রিপোর্ট দেয়, কাজ হয়ে গেছে। উপর তলার অফিসারেরা নিচের তলায় কাজ ঠেলে দেন। এমন করা চলবে না। এটা চরম অবহেলার পরিচয়। সরকারি কাজে গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না’।
জেলা ধরে রাজ্য সরকারের প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করার সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের সব অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। কাজের নিরিখে পূর্ব বর্ধমান, বীরভূমের মতো কিছু জেলা পিছিয়ে। পঞ্চায়েত দফতরের কাজে আরও জোর দিতে হবে। ১০০ দিনের কাজে আরও জোর দিতে হবে’। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলিতে উন্নয়নের গতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত জেলায় কাজ দ্রুতগতিতে হচ্ছে না কেন? আলিপুরদুয়ার আর পশ্চিম বর্ধমান জেলা থেকে বেশি অভিযোগ আসছে। পশ্চিম বর্ধমান সব ব্যাপারে পিছিয়ে থাকে কেন?’
সীমান্ত এলাকায় অবৈধভাবে টাকা তোলার ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা, ‘সীমান্ত এলাকায় গোটা দায়িত্ব পরিবহণ দফতরকে দেওয়া হচ্ছে। ৭ তারিখের মধ্যে পরিবহণ দফতর যেন পুরো দায়িত্ব নিয়ে নেয়। যা আয় হবে, তা ট্রেজারিতে জমা হবে। সরকারের প্রকল্পের কাজে লাগবে’।
রাজ্যে টিকাকরণের ঊর্ধ্বমুখী হার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্যের ৭২ শতাংশ মানুষকে আমরা করোনা (covid-19) টিকার দ্বিতীয় ডোজ দিয়েছি। মানুষের মধ্যে সচেতনতা আরও বাড়াতে হবে’। রাজ্য সরকার পরিচালিত একাধিক প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়েও এদিন বলতে শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। জানান, ইতিমধ্যেই দেড় কোটি মানুষকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার (laxmir vandar) প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। অর্থ সাহায্য করা হয়েছে ৪ কোটি টাকারও বেশি। পাশাপাশি শুরু হয়েছে পাড়ায় পাড়ায় সমাধানের কাজ। স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড (student credit card) প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলি অসহযোগিতা করছে। কোনও ব্যাঙ্ক না দিলে, সমবায় ব্যাঙ্ক ঋণ দেবে। যে সমবায় ব্যাঙ্ক দিচ্ছে না, তার কাছে জবাব চাওয়া হোক। সরকার গ্যারান্টি দিচ্ছে, ছাত্রদের ঋণ দিতেই হবে’। সরকারের কাছ থেকে পাওনা প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘কেন্দ্রের কাছ থেকে এখনও ৯০ হাজার কোটি টাকা রাজ্য পায়। বাজেট বহির্ভূত খরচ যাতে না হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। এখন শুধুমাত্র জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পই চলবে, নতুন কোনও প্রকল্প শুরু করা যাবে না’।