শহরে দলীয় সাংগঠনিক নির্বাচনে (organisational election) কার্যত নিজের পুরনো ফর্মে ‘দিদি’। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি (BJP) বিরোধী ‘জোটের’ প্রধান মুখ যে তিনিই, সে কথাই এদিন বলা-না বলায় বুঝিয়ে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সেইসাথে ভারত থেকে ‘বিজেপি তাড়ানোর’ ডাকও এদিন শোনা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) মুখে।
তৃণমূল যে আদতেই একটি সর্বভারতীয় দল, সে কথা মনে করাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অনেক ঝড়-ঝঞ্জা, বাধা, গণ্ডি অতিক্রম করে আজ এই জায়গায় তৃণমূল। প্রথমে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল-কংগ্রেস (TMC) তৈরি হয়েছিল। কিন্তু গোটা দেশে শাখা খুলতে দেখে সর্বভারতীয় করে দিই দলকে। প্রত্যেক দলেরই কোনও না কোনও রাজ্য থেকে উত্থান ঘটে। পণ্ডিত নেহেরুর হাত ধরে উত্তরপ্রদেশ (Uttarpradesh) থেকে উত্থান কংগ্রেসের (congress)। গুজরাট (Gujarat) ছিল বিজেপির আসল জায়গা”। কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা বাংলায় দলকে মজবুত করার প্রতিশ্রুতি দিন। আমাকে বলুন, দিদি, আপনি সারা ভারত থেকে বিজেপিকে তাড়ান”।
দলের সাংগঠনিক নির্বাচন প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “অনেক আগেই আমরা কমিশনের কাছ থেকে সর্বভারতীয় দলের স্বীকৃতি পেয়েছি। তৃণমূল শুধু বাংলার দল নয়। এখন জাতীয় দল হিসাবেও স্বীকৃতি পেয়ে গিয়েছি আমরা। মার্চের মধ্যে চেয়ারপারসন নির্বাচনের সময় দিয়েছিল কমিশন। আমরা এমনিতেই এগিয়ে থাকি। তাই সময়ের ঢের আগেই নির্বাচন করে নিলাম”।
এদিন বিজেপির পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর মুখে শোনা যায় রাজ্যপালের প্রতিও আক্রোশের সুর। নাম না করে রাজ্যপালকে বলেন, “বাংলায় গনতন্ত্র নেই, আইন নেই বলে আক্রমণ করছেন, আবার আমাকেই ট্যাগ করছেন। মা ক্যান্টিনের হিসাব চাইছেন, বলছেন ওঁর নির্দেশ মেনে চলতে হবে। রাজভবন থেকে দূরবীন নিয়ে বাংলার খুন, হিংসা দেখছেন বোধহয়। জীবনে নির্বাচনী প্রতিনিধি হননি, বার বার দলবদল করেছেন”। বঙ্গ বিজেপির অন্তর্দ্বন্ধের কটাক্ষ করে মমতা বলেন, “একদল ঘোড়ার পালকে রাজ্যশাসন করতে পাঠিয়েছে। এখন আবার ঘোড়ার পাল ঘোড়ার পালের সাথেই লড়ছে”।
তবে শুধু বিজেপিই নয়, এদিন মুখ্যমন্ত্রীর নিশানায় ছিল কংগ্রেসও। কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম বিজেপি বিরোধীরা এক জায়গায় আসুক। কিন্তু অহঙ্কার করে কেউ যদি বসে থাকে, তাহলে একলা চলো। একটা একটা করে ফুল গাঁথতে গাঁথতে গোটা মালা তৈরি করে নেব আমি”। গতকালের বাজেট (budget) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “…একটা বাজেট হল! বিজেপিকে দেখলে মনে হয় চু কিতকিত দল। মানুষ চাল চায়, ডাল চায়, হিরে নয়। হিরের ঝোল, চচ্চড়ি বানাবে? আর নিজেরা হিরের ঘণ্ট খেয়ে বসে থাকবে!”।