কিছুদিন আগে বাংলার বুকে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় যশ (Yaas Cyclone) বা ইয়াস। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে রাজ্যের বিভিন্ন উপকূলবর্তী অঞ্চলে যেমন দীঘা (Digha), মন্দারমনি এবং সুন্দরবনের বিস্তৃত অঞ্চল। দীঘা এবং মন্দারমনির মত পর্যটনকেন্দ্রে সমুদ্রের পাড়ের সম্পূর্ণ পরিকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। লন্ডভন্ড মমতার স্বপ্নের "মেরিন ড্রাইভ"। অন্যদিকে শতাধিক নদী বাঁধ ভেঙে প্লাবিত গোটা সুন্দরবনের প্রচুর গ্রাম। এই পরিস্থিতিতে আজ অর্থাৎ বুধবার নবান্নে পরিস্থিতি শুধরানোর জন্য একটি বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বৈঠকে তিনি দ্রুত দীঘা এবং মন্দারমনি সমুদ্রতটের সৌন্দর্যায়ন কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আসলে তিনি কিছুদিন আগে গোটা এলাকা পরিদর্শন করে কোথায় কি ক্ষতি হয়েছে তা দেখে এসেছিলেন। এবার তিনি খুব শীঘ্রই পশ্চিমবঙ্গের পর্যটনস্থল দীঘা এবং মন্দারমনিকে প্রাণবায়ু দিতে চান।
বৈঠকে উপস্থিত থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, "জলের তোড়ে বোল্ডারগুলো স্থানচ্যুত হয়েছে। দু’পাড়ের বসার জায়গাও ভেঙে গিয়েছে। এগুলি দ্রুত মেরামত করতে হবে। সমুদ্রের পাড় বরাবর প্রচুর দোকান ছিল। ডাব বিক্রেতারা বসতেন। সব ভেসে গিয়েছে। দ্রুত সেই সমস্ত হকারদের জন্য অস্থায়ী পরিকাঠামো তৈরি করে দেওয়া হবে। এছাড়া দীঘা মন্দারমনি সমুদ্রতট বরাবর যা ক্ষতি হয়েছে তা অতিরিক্ত যত্ন নিয়ে বানিয়ে তুলতে হবে।" এছাড়া দিঘা ব্রিজ তৈরি করার দায়িত্ব নিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে বিশ্ব বাংলা পার্ক গোছের জায়গাগুলি তৈরি করবে বেসরকারি সংস্থা।
দীঘা মন্দারমনি ছাড়াও তিনি এদিন সুন্দরবন অঞ্চলের শতাধিক নদী বাঁধ ভাঙ্গার প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ”প্রতিবার কোনও না কোনও দুর্যোগে বাঁধ ভাঙছে। টাকা নষ্ট হচ্ছে জলের মতো। জলকে আমরা কী বাঁধব, জলই তো আমাদের বেঁধে ফেলছে।” তাই মুখ্যমন্ত্রী পরিকল্পনামাফিক কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও প্রকৃতি প্রকৃতির হাত থেকে বাঁচাবে এই কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সুন্দরবন এবং দীঘা উপকূলে ম্যানগ্রোভ গাছ লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন বনদপ্তরকে। এবার বনদপ্তরকে আরও ৫ কোটি করে ম্যানগ্রোভ চারা বসাতে হবে দুই ২৪ পরগনা লাগোয়া সুন্দরবন এবং দিঘায়। অবশ্য আম্ফান এর আগেও সরকার ম্যানগ্রোভ চারা লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছিল। কিন্তু সেই সমস্ত গাছ কোথায় গেল সেই প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী আজ বলেছেন, "আগামী তিন দিনের মধ্যে ওই সমস্ত ম্যানগ্রোভ গাছ কোথায় গেল তার রিপোর্ট জমা করতে হবে। রিপোর্ট দেওয়া হবে বলে বসে থাকলে চলবে না। তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট চাই।"